পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/২৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨8૭ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড প্রথম অবস্থায় যে সব লোককে ধরেছে তাদেরকে জেটি ঘাটে গুলি করে হত্যা করেছে। কিন্তু শেষের আমি নিজের চোখে ৩ জন লোককে জীপ গাড়ির পিছনে বেঁধে রাস্তায় টেনে মেরে ফেলতে দেখেছি। তাদের সেই করুণ চিৎকারের কথা আমার এখন পর্যন্ত কানে বাজে। শেষের দিকে নারী নির্যাতন ব্যাপকভাবে চলতে থাকে। শামসুদ্দীন তালুকদার নামে একজনকে দুইজন পাক বাহিনী দিয়ে তার দুই পা দুই দিকে টেনে ছিড়ে ফেলা হয়। এই সময় আবদুল গফুর মিয়া বিএ সাহেবকে সে নিজে তার মুখের মধ্যে স্পিট ঢেলে দিয়ে আগুন জুলিয়ে নির্মমভাবে তাকে হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রথম ৩ মাস আমার ছেলের কোনো খবর পাই না। ৩ মাস পর একজন আমার বাসার মধ্য প্রবেশ করে এবং বলে যে আমাকে তাড়াতাড়ী কোন জায়গায় লুকান, আমি ক্যাপ্টেন জিয়ার কাছ থেকে খবর নিয়ে এসেছি। সে আমাদের কাছে ক্যাপ্টেন জিয়ার খবর দেয় এবং বলে যে সে ভাল আছে আপনি কোন চিন্তা করবেন না। দেশ খুব তাড়াতাড়িই স্বাধীন হবে। এর পর থেকে প্রায়ই সেই ছেলেটি এসে ক্যাপ্টেন পাক ক্যাপ্টেন এজাজ একদিন ঘোষনা করে দেয় যে, ক্যাপ্টেন জিয়া মঠবাড়িয়া যুদ্ধে মিলিটারীর হাতে অ্যারেস্ট হয়েছে এবং তাকে বরিশাল পাঠান হয়েছে। এই খবর আবার দালাল দিয়ে আমার কাছে পৌছে দিতো যেন আমি ভেঙ্গে পড়ি। অনেক সময় দালালরা আবার এসে বলতো যে আমরা ক্যাপ্টেন জিয়ার মৃত লাশ বলেশ্বর নদীতে ভাসতে দেখেছি। স্বাক্ষর/আফতাব উদ্দীন আহমদ ১৯/৮/৭৩