পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/২৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&○br বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড lこのbr l সুধা রাণী বসু গ্রাম- ছাচলেপুর ডাকঘর- পিংড়ী থানা- 向 জেলা- বরিশাল ১৩৭৮ সালের ৭ই জ্যৈষ্ঠ তারিখে ঝালকাঠি থানা হতে ১৪ জন বাঙালি পুলিশ স্থানীয় শান্তি কমিটির দালালসহ ছাচলেপুর গ্রাম অপারেশনে যায়। সকাল বেলা পুলিশগণ আমার পিতার বাড়ী আক্রমণ করে এবং তা জুলিয়ে দেয়। আমরা সবাই নিকটস্থ জঙ্গলে পালিয়ে যাই। আমি আমার বড় মেয়ে সমবাতী বসুকে সাহায্য আমার মেয়ে এবং অপর দুজন মেয়ে কমলা রানী দাস (বয়স ১৭) ও কল্পনা রাণী দাসকে (বয়স ১৮) ধরে নিয়ে যায়। পরে মেয়েদের খুঁজতে গিয়ে দেখি যে কমলা ও কল্পনাকে গুলি করে বিষখালি নদীর পারে হত্যা করেছে এবং সমাকে বেয়োনেট দিয়ে হত্যা করেছে। এছাড়াও আমার আত্মীয় দুর্গাশংকর দাসকেও গুলি করে হত্যা করে। আমরা পরে উক্ত লাশ দেখতে পাই। উক্ত মেয়েদের নৃশংসভাবে হত্যা করে এই পুলিশ বাহিনী। তার পরের দিন পূর্বোল্লিখিত পুলিশগণ পুনরায় উক্ত গ্রামে অপারেশনে যায়। তখন আমার স্বামী নদী পার হয়ে পিংড়ি গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নেয় এবং সেখান হতে অন্যত্র চলে যায়। বহু দিন তার কোনো সংবাদ জানতে পারিনি। পুলিশের ভয়ে আমরা জীবিত দুই মেয়ে এবং এক ছেলে নিয়ে চৌকিদার বাড়ীর জঙ্গলে আশ্রয় নেই। আমি আমার ছোট ২ পুত্র এক স্থানে গোপন করে থাকি। অন্যত্র আমার দুই মেয়ে আত্মগোপন করে থাকে। চৌকিদার তখন উক্ত পুলিশদের বলে যে এই হচ্ছে লিডার সঞ্জীবের মা, একে ধরো। তখন পুলিশরা আমাকে ধরে ফেলে এবং ওসি বলে থানায় যেতে হবে। যাও। তখন পুলিশ তার নিকট হতে ৩০০০/০০ (তিন হাজার) টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং আমাদের থানায় নিয়ে আসে। আমার অপর দুজন মেয়ে অসহায় হয়ে যায়। তাঁরা আশ্রয়ের জন্য ঘুরতে থাকে কিন্তু ভয়ে কেউ আশ্রয় দিতে স্বীকার হয়নি। একজন তাদের কান্না দেখে সদয় হয়ে তার বাড়ীতে আশ্রয় দেয়। যাহোক আমাকে থানায় নিয়ে এসে প্রায় দেড় মাস আটকে রাখে। তখন নিম্নে বর্ণিত দৃশ্যগুলি দেখেছি। থানা হতে পুলিশরা বিভিন্ন গ্রামে অপারেশন চালিয়ে নিরীহ লোকদের ধরে নিয়ে গিয়েছে এবং রাত তিনটার দিকে তাদের হাত বেধে দলবদ্ধ ভাবে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে। ভোর চারটার দিকে সুগন্ধা নদীর তীরে এবং থানা হতে কিছুটা দূরে বদ্ধভূমিতে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে। আমি থানা হতে বহু মানুষের চিৎকার ও করুণ আর্তনাদ শুনেছি। কাউকেউ রক্ষা করেনি। অনেক মানুষকে থানা হতে ঝালকাঠি মিলিটারী ক্যাম্পে নিয়ে যেত এবং সেখান হতে যখন উক্ত লোহার রড গরম করে উক্ত ব্যাক্তিদের শরীরের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দিতো। পরে তাদের থানাতে এনে রাতে উক্ত বদ্ধভূমিতে নিয়ে গিয়ে হত্যা করত। একদিন প্রায় ৯৫ (পচানববই) জন নিরীহ মানুষকে ধরে নিয়ে এসে হত্যা করে। প্রত্যেক দিন ধৃত ব্যক্তিদের নাম জিজ্ঞাসা করতো। কিন্তু সেই দিন তাদের সবাইকে নিয়ে গিয়ে লাইন করে হত্যা করেছে। সকালে একজন