পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৩২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VIII বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড լ Հ8Ծ լ মো: আবুল কাসেম গ্রাম- শেখপুর, থানা- লক্ষ্মীপুর জেলা- নোয়াখালী পাক বাহিনী যখন চন্দ্রগঞ্জ বাজারে আসে তখন আমি চন্দ্রগঞ্জ বাজারে ছিলাম। চন্দ্রগঞ্জ বাজারে আমার একটা দোকান আছে। সেই দোকানে আমি ছিলাম। পাক বাহিনী চন্দ্রগঞ্জ বাজারে আসিয়া চন্দ্রগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে তাহারা শিবির স্থাপন করে। তখন হইতে আমি মুক্তি বাহিনীকে গোপনভাবে সাহায্য করি এবং মুক্তি বাহিনীর পথ প্রদর্শক হিসাবে কাজ করিতে থাকি। একদিন রাত্রিতে প্রায় ১৭ জন মুক্তি বাহিনী আসিয়া আমাকে বলিল কিভাবে আমরা নোয়াপুর পুল ধ্বংস করিতে পারি? তখন আমি মুক্তি বাহিনীকে নোয়াপুর পুলের পথ দেখাইয়া দিলাম এবং তাহাদিগকে আমার দোকানে রুটি খাওয়াইয়া বিদায় করিলাম। ঐ তারিখে তাহারা নোয়াপুর পুল ধ্বংস করিয়া চলিয়া যায়। ঠিক তার দুইদিন পর একদল রাজাকার আমার দোকানে আসিয়া বলিল কাসেম নামে কোন দোকানদার আছে নাকি? তখন আমি বলিলাম হ্যাঁ আছে। রাজাকার বলিল কাসেমকে আমাদের দরকার আছে। তুমি পলায়ন করিলে দোকান পোড়াইয়া দেওয়া হইবে। এই কথা শুনিয়া আমি আর দুইদিন দোকানে আসি নাই। একদিন রাত্রিতে পালাইয়া আমাকে দোকানে আসিলাম। তৎক্ষণাৎ একদল রাজাকার আসিয়া আমাকে ধরিয়া ফেলিল এবং আমার চোখ বধিয়া রাজাকারের ক্যাম্পে নিয়া আসিল। ক্যাম্পে আনিয়া কোন কথা বলার আগে আমাকে বেত দ্বারা বেদম প্রহার করিল এবং বলিতে লাগিল বেটা কোথায় পলাইয়াছিলি? এখন মজা দেখাইতেছি। এই কথা বলার পর পর আবার বেত দ্বারা বেদম প্রহার করিতে লাগিল। তারপর আমাকে বলিল যে, নোয়াপুর পুল ধ্বংস করিয়াছিস এবং মুক্তি বাহিনীকে তোর দোকানে রুটি তৈরী করিয়া খাওয়াইয়া ছিস। এখন সত্যি করিয়া বল মুক্তি বাহিনরি ক্যাম্প কোথায়? আমি তখন কোন কথার জবাব দিতে পারি নাই। তারপর আবার একটা সূৰ্চ দিয়া আমার ডান হাতের আঙ্গুলের ভিতর ঢুকাইয়া দিলে আমি অজ্ঞান হইয়া পড়িয়া থাকি। এই খবর জানিতে পারিয়া আমার বাড়ী হইতে লোকজন আসিয়া একদল রাজাকারকে কিছু কাজকর্ম করিতে পারি না। স্বাক্ষর /মো: আবুল কাসেম ২৬/২/৭৩