পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৩২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

נסג5י বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড l Q88 ll মো: রফিকুল্লাহ গ্রাম- কাদির হানিফ থানা- সুধারাম ১৫ই এপ্রিল ১৫ জন রাজাকার আমাদের গ্রামে আসে, আমি তখন আমাদের গ্রামের দক্ষিণ চরায় ধান কাটিতেছি। রাজাকার আসিয়া আমাকে বলে যে, তোদের গ্রাম হইতে আমাদের চাউল তুলিয়া দিতে হইবে। আমি তখন রাজাকারকে বলি না ভাই আমি গ্রাম হইতে চাউল তুলিয়া দিতে পারিব না। তৎক্ষণাৎ আমাকে আমাকে পাক সেনাদের হাতে অৰ্পন করে। ঐ হইতে পাক সেনারা আমার শরীরের উপর দৈহিক পীড়ন আরম্ভ করে। প্রথমে আমার পাড়ে দড়ি বাঁধিয়া আমাকে একটা ঘরের আড়ার উপর ঝুলাইয়া রাখে এবং বার বার আমাকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে তুই মুক্তি বাহিনী, তোর কাছে অবশ্যই রাইফেল আছে। আমি প্রশ্নের জবাবে বলি না হুজুর আমি কোন মুক্তি নই, আমার কাছে কোন রাইফেলও নাই। এইভাবে আমাকে ঐ খানে ৭ দিন বাঁধিয়া রাখে এবং দিনের শেষে বিকালে আমাকে প্রত্যেক দিন এইভাবে প্রহার করে। ১৭ই এপ্রিল তারিখে আমাকে আবার চোখ বাঁধিয়া একটি অন্ধকার ঘরের মধ্যে রাখে এবং ঐ তারিখে বেগমগঞ্জ শিবিরে লইয়া বেত দ্বারা বেদমভাবে প্রহার করিতে থাকে। এ অবস্থায় আমি অজ্ঞান হইয়া পড়ি। এই খবর শুনিয়া আমার এক আত্মীয় মো: সামছুল হক সাহেব আমাদের গ্রামের ও ইউনিয়নের রাজাকার কমাণ্ডার মো: মীর কালা মিয়া মেকারকে ধরিয়া ৫০০ টাকার বিনিময়ে আমাকে মাইজদি জেলখানায় লইয়া আসিল। মাইজদি জেলখানায় আসিয়া আবার পাক সেনাদের হাতে পড়ি। এই জেলখানায় আমাকে দৈনিক এক হাতে পনের সের পানি আর এক হাতে পনের সের পানি লইয়া আধা মাইল চলিতে হইত। এইভাবে আমি মাইজদি জেলখানায় তিন মাস ছিলাম। মাইজদি শহর মুক্ত হওয়ার পর আমি জেলখানা হইতে মুক্তি পাই। টিপসহি/মোঃ রফিকুল্লাহ