পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৩৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○○ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড լլ Հ( Ջ լ ছালেহ আহমদ গ্রামঃ- চর চান্দিয়া থানা- সোনাগাজী ২৫শে মার্চের সময় একটা ধারনা ছিল যে, হানাদার বাহিনীরা এই নতুন এবং অচেনা, অজানা দেশে আসিয়া টিকিতে পারিবে না। সেইজন্য প্রথম দিকে ভারত যাই নাই। অবশ্য প্রথম দিকে ভারত যাইতে পারিতাম। কিন্তু যখন বাংলাদেশের মধ্যে রাজাকার আলবদর ও হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন পল্লীর আনাচেকানাচে ছড়াইয়া পড়িল তখন আমাদের ভারতে যাওয়া সম্ভব হইল না। আমরা দেশের পরিস্থিতি ভাল না দেখিয়া দুরে এক আত্মীয় বাড়ীতে আশ্রয় লই। আমাদের আত্মীয় বাড়ীতে থাকার গোপন সংবাদ কয়েকজন রাজাকার জানিতে পারায় আমাদের তল্লাশের জন্য যায় এবং আমাদেরকে জুলাই মাসের ২৭শে তারিখে ধরিয়া ফেলে। সেখান হইতে বন্দী করিয়া আমাদের ৪জনকে সোনাগাজী থানায় লইয়া আসে। বহু ভয়ভীতি দেখায় যে, রাজাকারে নাম না দিলে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি আমরা ভোগ করিব। তাছাড়া থানায় লইয়া আসিয়া ১৫০০০ টাকার বণ্ড সই করিয়া লয় এই মর্মে যে আমাদের এলাকায় থাকিতে হইবে এবং রাজাকার ও শান্তি কমিটিতে নাম দিতে হইবে। আমরা বণ্ড সই করিয়াছি কিন্তু রাজাকার ও শান্তি কমিটিতে নাম দেওয়ার প্রশ্নে মুখে সব সময়ই অস্বীকার করিয়াছি। তারপর আমাদিগকে সোনাগাজী থানার সি, এণ্ড বি এর গেষ্ট হাউসে লইয়া আসে এবং মাথা নীচের দিকে রাখিয়া পা উপরের দিকে শুণ্য করিয়া রাখে। বেত ও বন্দুকের বট দ্বারা বেদম প্রহার করে। আমরা চিৎকার বা কান্নাকাটি আরম্ভ করিলে আরও বেশী বা জোরে আঘাত করে। এইভাবে আমাদেরকে ৫/৭দিন অত্যাচার ও শাস্তি দিতে থাকে। তাহা ছাড়া মাঝে মাঝে বুট দ্বারা লাথি মারে। তথাপি আমরা রাজাকার ও শান্তি কমিটি করিতে রাজী হই নাই। আমরা কয়েকজন রাজাকারকে গোপনে কিছু টাকা দেওয়ার স্বীকার হইলাম। তারপর আমাদের নিকট হইতে ৫০০ টাকা লইয়া আমাদেরকে জুলুম ও অত্যাচার হইতে রেহাই দেয়। তারপর আমরা আর বাড়ী ঘরে থাকিলাম না। দেশ স্বাধীন হইলে আমরা আমাদের বাড়ী ফিরিয়া আসি। বাড়ী ফিরিয়া দেখি বাড়ীর আসবাবপত্র রাজাকার ও হানাদার বাহিনীরা লুটতরাজ করিয়া লইয়া গিয়াছে। ছালেহু আহমদ