পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৩৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২২ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড |l პNoO |l গোলাম রফিক থানা- কসবা জেলা-কুমিল্লা পাক সেনারা ৩০০ জন লোককে বিভিন্ন প্রকারে হত্যা করে। তন্মধ্যে এই এলাকারান্তগর্ত চারগাছ গ্রামে ঘরের মধ্যে ৩৪জন লোককে গুলি করিয়া হত্যা করে। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ যে, উক্ত গ্রামের জনৈক ব্যক্তি আখতার উদিনের বাড়ীতে সন্ধ্যায় বিভিন্ন পর্যায়ের লোক এক সঙ্গে মিলিত হইয়া রাজাকার এবং পাক সেনাদের পৈশাচিক উপায়ে নিরীহ জনসাধারণের বাড়ীঘর লুণ্ঠন, প্রজুলন, ধ্বংস ও বীভৎসতার সমালোচনা করিতে থাকে। কিন্তু রাজাকার এবং পাক সেনাদের শিবির উক্ত গ্রামের সন্নিকটে অবস্থিত ছিল। ঘটনার বিবরণে আরও প্রকাশ যে, উক্ত সময়েই কয়েকজন রাজাকার এবং পাক সেনা পাহারায় রত ছিল। একজন রাজাকার গোপনে উক্ত বাড়ীর আড়ালে থাকিয়া তাহদের নিন্দার কথা শোনে এবং সমস্ত বৃত্তান্ত পাক সেনাদের কর্ণগোচরে দেয়। সঙ্গে সঙ্গেই কয়েকজন পাক সেনা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং অতর্কিত ষ্টেনগান দ্বারা ঘরটি লক্ষ্য করিয়া আক্রমণ চালায়। এই পৈশাচিক আক্রমণে যাহারা আত্মরক্ষার জন্য রাস্তায় বাহির হইয়া আসিয়াছিল তাহাদের মধ্যেও অনেকেই গুলির আঘাতে চির নিদ্রায় লুটিয়া পড়ে। মুমূর্ঘ লোকদের উপরেও চললো বেয়োনেট চার্জ। ফলে ঘটনাস্থলেই ৩৪ জন লোক শাহাদাৎবরণ করেন। নিম্নে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হইলঃ (১) অশ্বিনী পোদ্দার, (২) মহানন্দ আচাৰ্য্য, (৩) আব্দুল মিছির, (৪) মেথর ছামারিয়া, (৫) কাঞ্চন মিঞা। ইহা ছাড়াও অত্র এলাকার ও অন্যান্য এলাকার ৩০জন লোককে সন্দেহবশতঃ জীবন্ত অবস্থায় মাটিচাপা দেওয়া হয়। মণিঅন্ধ গ্রামের জনৈক ব্যক্তি জনাব গোলাম শফিককে ঘরের মধ্যে রশি দ্বারা বাঁধিয়া রাখিয়া আগুন জ্বালাইয়া দেয়। ফলে ঘটনাস্থলেই গোলাম শফিক সাহেব আগুনে পুড়িয়া মারা যান। মগুড়া ইউনিয়নে এবং অন্যান্য এলাকা হইতে বহু মেয়েকে ধরিয়া আনিয়া পাক পিশাচরা নির্যাতন ও পাশবিক অত্যাচার চালায়। পাক সেনাদের এই পৈশাচিক ব্যবহারে এই এলাকার শতকরা ৯০ জন লোক দেশ ত্যাগ করে। মোঃ গোলাম উদ্দিন