পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৩৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ֆ Այbr বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড রমনী শীলের চোখ আছে, আছে অনুভূতি। নরপিশাচদের এই ভুলের জন্য হয়তো রমনী শীল আজো বেঁচে শ্রী রমনী শীলের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছিলেন, আমরা তার বিবরণ পেয়েছি। রমনী জানিয়েছেন, কিভাবে বাংলার কৃতি সন্তান স্বনাম ধন্য-শ্ৰী ধিরেন্দ্রনাথ দত্তকে হানাদারেরা অত্যাচারের জর্জরিত করে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করছে। তিনি জানিয়েছেন ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে তিনি গুলি করে হত্যা করতে দেখেছেন। ধীরেন বাবু সম্পর্কে বলতে গিয়ে রমনী শীলের চোখের জল বাঁধ মানেনি। মাফলারে তিনি চোখ মুছে বললেন আমার সে পাপের ক্ষমা নেই। বাবু স্কুল ঘরের বারান্দায় অতি কষ্টে হামাগুড়ি দিয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন কোথায় প্রসাব করবেন আমি আঙ্গুল দিয়ে ইশারায় তাকে প্রসাবের জায়গা দেখিয়ে দেই। তখন তিনি অতি কষ্টে আস্তে আস্তে একটি পা ধরে সিড়ি দিয়ে উঠানে নামেন। তখন আমি ঐ বারান্দায় বসে এক জল্লাদের দাড়ি কাটছিলাম। আমি বার বার বাবুর দিকে অসহায়ভাবে তাকাচ্ছিলাম বলে জল্লাদ উর্দুতে বলে এটা একটা দেখার জিনিস নয় নিজের কাজ কর। এরপর আর বাবুর দিকে তাকাবার সাহস পাইনি। মনে মনে শুধু ভেবেছি বাবু জনগণের নেতা ছিলেন, আর আজ তার কপালে এই দুর্ভোগ। তার ক্ষতবিক্ষত সমস্ত দেহে তুলা লাগান, মাথায় ব্যাণ্ডেজ, চোখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় উপর্যুপরি কয়দিনই ব্রিগেড অফিসে আনতে নিতে দেখি। রমনী শীলের জবান বন্দীতে ময়নামতির মর্মান্তিক কাহিনীর আরো কিছু অংশ এখনে তুলে দিচ্ছি: ২৯শে মার্চে ক্যান্টনমেন্ট গত মার্চের ২৯ তারিখে কুমিল্লা ক্যান্টনমেণ্টে বাংগালী অফিসার বেসামরিক কর্মচারীসহ প্রায় তিনটায় ৪০ নং ফিল্ড এমুলেন্স ইউনিটে কিছু গোলাগুলির আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়। তার পর পরই আমরা দেখতে পাই ক্যান্টনমেন্টের বিভিন্ন এলাকা থেকে সমস্ত বাংগালী অফিসার ও অন্যান্য কর্মচারীকে ব্রিগেড হেড কোয়ার্টারে নিয়ে জমা করতে থাকে। এবং এই সংগে আমাকেও আমার সরকারী বাসগৃহ থেকে ধরে নিয়ে আসে। তিনি, বলেন, “বেসামরিক, সামরিক বিভাগের সাধারণ ব্যক্তিদেরকে আটক করা হয়। ৪০ নং এমুলেন্স এর ফিল্ড কমান্ডিং অফিসার লেঃ কর্ণেল জাহাংগীরসহ অন্যান্য অফিসারদের এনে আমাদের সংগে আটক কারে। পরের দিন দুপুরে প্রশাসনিক জে. সি. ও সুবেদার আকবর খান, লেঃ কর্ণেল জাহাংগীর-এর গায়ের জামা খুলে তা দিয়ে তার চোখ বেঁধে ফেলে। তখন তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। অফিস প্ৰাংগণের আনুমানিক ২৫ গজ দক্ষিণে একটি গর্তের পাশে দাঁড় করিয়ে গুলি করা হয় । তাকে এইভাবে গুলি করে হত্যার দৃশ্য আমরা সকল বন্দী ও ব্রিগেড হেড কোয়ার্টরের ব্রিগেডিয়ার থেকে সকল ষ্টাফ এর পরপরই ১ লা মার্চে অবসরপ্রাপ্ত সিলেটের অধিবাসী মেজর হাসিব (এস, এসও) এবং শিক্ষা বিভাগের ক্যাপ্টেন মকবুলকে নিয়ে একইভাবে পরপর গুলি করে হত্যা করা হয়। ইত্যবসরে ক্যান্টনমেন্টে মুজাহিদ বাহিনীর অফিসার ক্যাপ্টেন মন্তাজ এসে উক্ত জল্লাদদ্বয়কে শাসিয়ে বলে যে একজন একজন করে এভাবে হত্যা করলে সময়ে কুলোবে না, কারণ তিনশত এর মত বাংগালীকে হত্যা করতে হবে। ক্যাপ্টেনের ধমক খেয়ে এর