পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՖԵ-Գ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড রমনা পার্কের বধ্যভূমি দৈনিক বাংলা ৮ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২ ক্ষয়ে যাওয়া পোষাক দেখে কি তাদের সনাক্ত করা যাবে? ৷ হাসিনা আশরাফ ॥ রমনা পার্কের উত্তর পূর্ব কোণটা কি পাক সামরিক চক্রের কোন বধ্যভূমি সমাধিস্থল? রাজধানী ঢাকার কেন্দহলে অবস্থিত রমনা পার্কের উত্তর কোণটার যেদিকে ভূতপূর্ব প্রেসিডেন্ট হাউসের সীমানা শুরু হয়েছে, তার থেকে কিছুটা ভেতরের দিকেই এটি অবস্থিত। পুরো জায়গাটাই প্রায় জুড়ে রয়েছে, বেগুনী বর্ণের বোগেন ভিলা বা বাগান বিলাসের রঙিন কুঞ্জ। এই ঝোপটির নীচে বড় বড় কয়েকটি গর্তে এবং পাশের উচু স্থানে ইতস্তত ছড়িয়ে রয়েছে নরকংকালের অস্থি এবং মাথার খুলি। মাটির সাথে সমান হয়ে ছড়িয়ে আছে হঠাৎ দেখলে বোঝা যায় না। জায়গাটা যে সত্যিকার কতখানি বিস্তৃত বার থেকে তা আজ বেঝার উপায় বেই। তবে এখানকার অনেকেই জানিয়েছে যে, পশরা অসংখ্য মানুষকে ট্রাকে করে প্রেসিডেন্ট হউসের মধ্যে নিয়ে হত্যা করার পর গর্তের মধ্যে পুতে রাখতো। বৃষ্টির পানিতে গর্তগুলো যখন ভরে যায় তখন পানির সাথে সাথে কতকগুলো আধপচা লাশ এবং সঙ্গে অসংখ্য স্কুল, কলেজের বই লেসে উঠতো। এসব লাশের মধ্যে কয়েকটি লাশের লম্বা চুল এবং দেহের গঠন দেখে মহিলা বলে চেনা গিয়েছিল। রমনা পার্কের নিভৃত এই প্রাস্তে কোন হতভাগা ভাইবোনদের সমাধি স্থল যে রচিত হয়েছিল কংকালের অস্তি আর ভগ্ন খুলির মাঝে, আজ তা জানা যাবে না। তবে প্রশ্ন জাগে মনে এরা কি সেই হতভাগা পুলিশ ভইদের কেউ, যারা অসহযোগ আন্দোলনের সময় দস্য ইয়াহিয়াকে পাহারা দেবার জন্য প্রেসিডেন্ট হাউসে নিযুক্ত হয়েছিল; প্রশ্ন জাগে মনে, এরা কি সেই ছাত্র ভইদের কেউ, যারা শুধু দেশপ্রেমের শপথ নিয়ে জীবন্ত আত্মার তাগিদে শূন্য হাতে রুখে দাঁড়িয়েছিল জল্লাদ পাক বহিনীর বিরুদ্ধে?