পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"లిఫి( বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ সিরাজগঞ্জ যমুনা পারের কিছু হত্যা-কাহিনী | দৈনিক আজাদ ২ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২ এখানকার প্রত্যক্ষদশীদের কাছ থেকে পাকিস্তানীদের নৃশংস নরমেধযজ্ঞের কাহিনীগুলো একে একে ছিনিয়ে এনে লঞ্চ ঘাটে জবাই করতো আর নদীর বুকে ছুড়ে ফেলে দিত। সিরাজগঞ্জের সাবজেলটি ঠিক এমনি জবাই খানার কাজে ব্যাহৃত হতো। এসব একদিন দু’দিনের ঘটনা নয়। এপ্রিল মাসে হানাদাররা সিরাজগঞ্জে প্রবেশের পর থেকে নয় মাস ধরে দিনের পর দিন এর পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। আর গ্রামে গ্রামান্তরে মানুষ হতভাগ্যদের আর্তনাদে শিউরে উঠেছে। এতে করে সিরাজগঞ্জের জবাইখানাগুলোর কমপক্ষে ৩ হাজার লোক মারা পড়েছে। আর যে বন্দর ২৫শে মার্চের আগে অহরহ কর্মব্যস্ত থাকতো তা-ই আরা ২৭ শে এপ্রিলের পর এক জনমানবহীন প্রেতপুরীতে পরিণত হয়। লোকজন যতদূর সম্ভব এই ঘাটি এড়িয়ে চলতে চাইত। বার্তা প্রতিষ্ঠান বি এস এস এর প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জের আওয়ামী লীগ, ন্যাপ মুক্তিবাহিনী আর মুজিব বাহিনীর বহু নেতার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। তারা জানান যে ২৭শে এপ্রিল থেকে পাঁচ দিন ধরে তারা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কম করে ৫শত লোককে হত্যা করেছে। আজ এসব কথা লিখতে বসে বারইতলা গ্রামটির কথা মনে পড়ে গেলো। কাজীপুর থানার এই গ্রামে গত বছর নভেম্বরের কোন এক সময়ে তারা হামলা করে। মাত্র একটি দিনের নারকীয় যজ্ঞ। অথচ এই একটি দিনে নারী, পুরুষ ও শিশুতে মিলে ২শত লোককে জল্লাদরা হত্যা করে। কমপক্ষে ২ শত ঘাবাড়ী জুলিয়ে দেয়। এরও আগে মে মাসে সিরাজগঞ্জ থানার বাবতীতে মারা পড়ে ১৭০ জন। বারইতলা আর বাবতী এই দুজায়গাতেই মুক্তিবাহিনী বীর বিক্রমে শত্রকে বাধা দিয়েছে। এভাবে নরহত্যা, লুটতরাজ আর অগ্নিসংযোগের অমানুষিক ইতিহাস ঘাটলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে এক একটি গ্রামের ছবি: তামাই, রাজাপুর, সাইদাবাদ, সিংলাবাড়ী।