পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

הקלסי বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড রাজশাহীর গর্তে আরো নরকংকাল দৈনিক বাংলা ৪ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২ আধমরা লোকগুলোকে পশুরা মাটিচাপা দিয়েছিল (নিজস্ব সংবাদদাতা প্রেরিত) রাজশাহী, ২রা ফেব্রুয়ারী।- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রেলওয়ে ষ্টেশনের পাশে নরকংকাল ভর্তি আরো গর্ত্যের সন্ধান পাওয়া গেছে। দৈনিক আজাদের প্রতিনিধি ও রাজশাহী জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারী জনাব মোহাম্মদ আবু সাঈদকে হত্যার পর বর্বর পাক বাহিনী এই গর্তে পুতে রাখে। জানা গেছে যে, গত বছর ২৮শে জুন পাক বাহিনীর কতিপয় দালাল জনাব আবু সাঈদকে ধরে নিয়ে যায়। এই দালালদের মধ্যে তৎকালীন দৈনিক সংগ্রামের স্থানীয় প্রতিনিধিও ছিল। জনাব সাঈদকে সার্কিট হাউসে নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকের বাড়ীতে নিয়ে যাওয়া হয়। এখানে প্রায় এক সপ্তাহ আটক রাখা হয়। এরপর ৫ই জুলাই অপর ১৫ জন ব্যক্তির সাথে জনাব সাঈদকে জোহা হলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দিনাজপুরের জনৈক রেলওয়ে কর্মচারীকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। বর্বর পাক বাহিনী মৃতদেহটি রেলওয়ে ষ্টেশনের দিকে বয়ে নিতে বন্দীদের বাধ্য করে। ষ্টেশনের পাশে একটি বাবলা গাছের নীচে তাদের সামনেই একটি গর্ত করা হয়। এরপর তাদের সকলকে জোর করে গর্তের মধ্যে ঠেলে দিয়ে বেয়োনেট দিয়ে খোঁচানো হয়। এই সাথে পাশ থেকে মাটি নিয়ে তাদের সবাইকে অর্ধমৃত অবস্থায় গর্তের মধ্যে চাপা দেওয়া হয়। কিন্তু এদের মধ্যে রাজশাহী জিন্না ইনষ্টিটিউটের পিয়ন আব্দুল কাদের, শ্যামপুরের জনৈক রুপভান মিয়া পরস্পরের সাহায্যে গর্তের মধ্যে থেকে কোন রকমে উঠে ভারতে পালিয়ে যায়। বাংলাদেশে ফিরে আসার পর এদের কাছ থেকেই এই লোমহর্ষক কাহিনী জানা গেছে। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, স্বাধীনতার স্থানে এ ধরনের শত শত গর্তের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ ছাড়া পাক বাহিনী আত্মসমর্পণের অব্যবহিত পূর্বে নিহত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ছাত্র ও অপরাপর নৃশংসভাবে হত্যা করে লম্বা গর্তের মধ্যে পুতে রাখে। এদেরকে গলা কেটে হত্যা করা হয় বলে জনৈক প্রত্যক্ষদশীর বিবরণীতে জানা গেছে।