পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88어 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ পটুয়াখালীর জেলখানায় বধ্যভূমি দৈনিক বাংলা ১৬ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২ পটুয়াখালীর জেলখানায় বধ্যভূমি নিজস্ব সংবাদদাতা প্রেরিত ॥ পটুয়াখালী, ১৫ই ফেব্রুয়ারী। -বর্বর পাকবাহিনী গত বছরের ২৬শে এপ্রিল পটুয়াখালী শহর কজা করার পর গত ৮ মাসে ঠাণ্ডা মাথায় তাদের দালালদের সহযোগিতায় হাজার হাজার বাঙ্গালীকে হত্যা করেছে। প্রকাশ, নিহত ব্যক্তিদের কাউকে নদীর জলে ফেলে দিয়েছে কাউকে বা বিভিন্ন স্থানে গর্ত খুঁড়ে মাটিচাপা দিয়ে রেখেছে। এই পাষ-রা। সম্প্রতি পটুয়াখালীর জেলার অভ্যন্তরে একটি বধ্যভূমি আবিষ্কৃত হয়েছে। এখানে বহু কবর রয়েছে। কয়েকটি কবরের মাটি খুঁড়ে কংকালের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। একটি গর্তের মধ্যে ৩ থেকে ৪ জন, কোথাও বা বেশী মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে এখানে (জেলের অভ্যন্তরে) ৫০০ শত লোককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। মৃত ব্যাক্তিদের অনেকেই যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে তা কংকাল দেখে বুঝতে কষ্ট হয় না। কংকালে বুলেটের ছিদ্র স্পষ্ট দেখে যায়। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে পুলিশের লোক রয়েছে, কবরের মধ্যে পোশাক দেখে বুঝা গিয়েছে। এখানেই ঘুমিয়ে রয়েছেন শ্রদ্ধেয় কমু্যনিষ্ট নেতা হিরালাল দাসগুপ্ত, পাথরঘাটার সি, ও, তরুণ ব্যবসায়ী নিরঞ্জন বিশ্বাস সহ নাম না জানা দেশমাতৃকার সন্তানেরা জানা গিয়েছে এদের লাইন করে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হতো। জানা গিয়েছে যে এসকল মানুষকে যখন লাইন করে দাঁড় করিয়ে গুলি করা হতো তখন বুলেট মানুষের শরীর ভেদ কর দেওয়ালে এসে আঘাত করতো। জেল খানার অদূরে বসবাসকারী ব্যক্তিরা আমাকে জানিয়েছেন যে, যখন মানুষ গুলিকে গুলী করা হতো তখন মৃত্যুযন্ত্রনায় কাতর বহু লোকের করুণ আর্তনাদ তারা শুনতে পেতেন। তারা আরো জানিয়েছেন যে দুপুর ২টা থেকে ৫টার মধ্যে কাজ হতো। জানা গিয়েছে যে বরিশাল জেলার আটঘর কুড়িয়ানায় পৈচাশিক হত্যাকাণ্ড চালিয়ে সৈন্যরা পটুয়াখালীতে ফিরে এসেই তৎকালীন মেজর নাদির পারভেজের নির্দেশে ৬০/৭০ জন লোককে জেলের মধ্যে গুলি করে হত্যা করেছে।