পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8& 8 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড মনুত্রীজে প্রকাশ্য গণহত্যা দৈনিক আজাদ ২৬ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২ মৌলভীবাজার মনুত্ৰ জে প্রকাশ্যে গণহত্যা জল্লাদরা শেরপুর জেটিতে দুই হাজার লোককে মেরেছে মৌলভীবাজার, ২৪শে ফেব্রুয়ারী। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী মৌলভীবাজার মহকুমার বিভিন্নস্থানে যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে সেসব বধ্যভূমি ক্রমে আবিষ্কার করা হচ্ছে। এ ধরনের একটি বধ্যভূমি শেরপুর জেটি থেকে আবিষ্কৃত হয়। তথায় প্রায় দুই হাজার লোককে হত্যা করা হয় এবং তাদের লাশ কুশিয়ারা নদীতে নিক্ষেপ করা হয়। শেরপুরে হানাদার বাহিনীর একটি সরবরাহ কেন্দ্র ছিলো। সেখান থেকে তারা নৌ ও সড়ক পথে সমগ্র জেলায় হামলা চালিয়েছে। শেরপুরে তিন-তিনবার মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়। ফলে পার্শ্ববর্তী গ্রাম হালোর খুনা, শেরপুর, ব্রাহ্মণগ্রাম, কলরগাঁও, আয়েনপুর, নতুনবস্তি, মোবারকপুর ও কাসুরপুর জনশূন্য হয়ে পড়ে। শেরপুরে পাক বাহিনীর সুন্দর ঘাঁটি ছিলো।এমনকি তথায় নৌবাহিনীও ছিলো। এখান থেকে তারা নরহত্যাসহ যাবতীয় ধ্বংসযজ্ঞ চালাতো। তারা নৌ জাহাজ ও গানবোট ব্যবহার করতো এবং তা থেকে কুলবর্তী গ্রামে গোলাবর্ষণ করতো। তারা বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে বিশেষতঃ মহিলাদের ধরে তাদের অন্যান্য ক্যাম্পে নিয়ে যেতো। প্রকাশ্য হত্যা এছাড়া গত ১৪ই মে হানাদার সৈন্যরা মৌলবীবাজারে মনুত্রীজের উপর বিভিন্ন লোককে ধরে এনে প্রকাশ্যে গুলী করে হত্যা করে। প্রত্যক্ষদশী স্থানীয় অধিবাসীরা এ হত্যাকাণ্ডের নারকীয়তা এখনো ভুলতে পারছে না। হানাদার জল্লাদ বাহিনী উল্লেখিত দিনে সমস্ত থানাবাসীকে উক্ত ব্রীজে সতবেত হবার নির্দেশ দেয়। ভয়ে আতঙ্কিত প্রায় এক হাজার লোক তথায় উপস্থিত হলে তাদের সামনে হিলারপুরবাসী ময়না মিয়া, কলমদার মিয়া ও উস্তার হাজীকে আনা হয় এবং ব্রীজের উপর শুইয়ে গুলী করে হত্যা করা হয় এবং পরে তাদের পানিতে ফেলে দেয়া হয়। ময়না মিয়া প্রাণে বেঁচে গেলে তাকে ক্যাম্পে নিয়ে তথায় হত্যা করা হয়।