পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8@ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড কেউ পাশবিকতা থেকে অব্যাহতি পায়নি দৈনিক আজাদ ৮ মার্চ, ১৯৭২ বারো বছরের কচি কিশোরী কিংবা পঞ্চাশের বৃদ্ধা কেউ পাশবিকতা থেকে অব্যাহতি পায়নি আবুল হোসেন মীর ॥ উধার আটঠো লাশ হ্যায়। কুত্তাছে খিলানা হ্যায়, খিলাদো। আউর না কিসিকো দেনা হ্যায় দে দো। যাও, যো তোমহারা মর্জি করো।” পাক জল্লাদদের কথাগুলো অবিকল মনে রেখেছেন আমির হোসেন। ঠিক তেমনি মুখ বিকৃত করে শব্দগুলো শোনালেন আমাদের। ক্যান্টনমেন্ট এলাকা ছেড়ে আমরা পশ্চিম দিকের মনোহরপুর গ্রামে গিয়ে উঠতেই দেখা হয়েছিল। আমির হোসেনের সাথে। আমির হোসেন মুক্তি বাহিনীকে গোপনে তথ্য সরবরাহের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। পাক বাহিনীর হাতে ধরাও পড়েন। দীর্ঘ চারমাস হানাদারদের নরকে কাটাবার পর সৌভাগ্যক্রমে ছাড়া পেয়ে যান। ছাড়া পেয়ে বাড়ী ফেরার পথে গাঁয়ের বিসু মণ্ডলের বাড়ীর কাছে দেখা হয় একদল দসু্যর সাথে। সেই দস্যদের একজন আমির হোসেনকে শোনায় উপরোক্ত কথাগুলো। তিনি ক পা এগুতেই সত্যি সত্যিই দেখতে পান হাত পা বাঁধা উলঙ্গ অবস্থায় আটটি মরদেহ। তাদের কারো কারো শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিচ্ছিন্ন করা। বিমূঢ় আমির হোসেন দেয়ালটা ভেঙ্গে লাশগুলো মাটিচাপা দিয়ে চলে যান আপন ঘরের দিকে। নীল বেদনার্ত হৃদয়ে। আমির হোসেনের কাছ থেকে জানা গেল ক্যান্টনমেন্টের অসংখ্য হত্যাযজ্ঞের কাহিনী। তিনি বললেন, সেভেন ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্সের ও, সি লেঃ কর্নেল আব্দুল হাইয়ের লাশ হত্যার দুদিন পর আনা হয় সি,এম,এইচ-এ। তাঁর লাশ পাওয়া যায় গ্যারিশন সিনেমা হল সংলগ্ন পশ্চিম দিকের তালতলায়। তাঁর তলপেটে সতেরটি বুলেটের চিহ্ন ছিল। এই কোম্পানীর কোয়ার্টার মাষ্টার ক্যাপ্টেন শেখের ভাগ্যেও একই পরিণতি ঘটেছিল। আমির হোসেন তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে আরো জানালেন, সি,এম,এইচ-এর নার্সিং ষ্টাফ হাবিলদার আব্দুল খালেক এবং তার সঙ্গী ফজর আলী ও একজন সুবেদার এম, আই রুমে ঔষধ আনতে যাওয়ার পথে রানওয়ের নিকটবর্তী দরজার কাছে ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্সের সিপাইরা তাদেরকে গুলী করে হত্যা করে। এছাড়া সি,এম,এইচ-এর মসজিদের ইমামকেও তারা গুলী করে হত্যা করে। হত্যা করার আগে দসু্যরা ইমাম সাহেবকে কলেমা পড় বললে তিনি শ্রদ্ধার সাথে পবিত্র কলেমা আবৃত্তি করে শোনান। কিন্তু জনৈক দস্য মুখ বিকৃত করে বলে, শালা গাদ্দার এক মাওলানা কলেমা ভী পড়নে নেহী স্যাকতা। আমির হোসেন জল্লাদদের নরহত্যার পরিকল্পনা সম্পর্কে বললেন, বাঙ্গালীদের ধরে এনে প্রথমে আই, এস, আই, অতঃপর সেখান থেকে ৬১৪ এম, আই, ইউ এবং পরে ৪০৯ জি, এইচ, কিউ-এ পাঠিয়ে দেয়া হতো। ৬১৪ এফ, আই, ইউতেই নাকি জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে কঠোর নির্যাতন চালানো হতো। এম, ই, এসের জনৈক কর্মচারী হারেছ উদ্দীন জানান যে, ৩০শে মার্চ তিনি গ্রেফতার হন। ১৪ দিন ধরে ক্যান্টনমেন্টের কর্মচারীদের পরিবারের মহিলাদের একটি বন্দী শিবিরের সন্ধান পাওয়া গেছে। সে জানিয়েছে যে, ৫৫ নং ফিল্ড রেজিমেন্ট