পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৫২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খণ্ড
৪৯৬

বেঁচে গেলাম। কিন্তু সেদিকে আমার ভ্রূক্ষেপ নেই। ক্ষতস্থান থেকে রক্ত ঝরছিল অবিরল। গুলী পিঠ দিয়ে বেরিয়ে গেল তবুও আমি মরলাম না। সবাই যখন মরে গেছে, আমার বেঁচে আর লাভ কি।” প্রিয়জন হারাবার বেদনায় ব্যথিত রানু কান্নাভেজা কণ্ঠে বলছিল কথাগুলো।

 গুলীর আঘাতে জর্জরিত মধুবাবু বর্বররা চলে যাবার পরও অনেকক্ষণ বেঁচে ছিলেন। তার ঘণ্টাখানেক পর আবার ওরা এসেছিল। ওরা মধু বাবুকে নিয়ে গেলো। বাবাকে রেখে যাবার জন্য চীৎকার করে সেদিন বলছিল রানু। বুক ভরা সাহস নিয়ে রানু বলছিল তাহলে আমাকেও বাবার সাথে নিয়ে যাও। আমারও তো গুলী লেগেছে। বর্বররা তাকে নিয়ে যায়নি। বাবাকে নিয়ে গেলো। আবার ফিরিয়ে দেবে আশ্বাস দিয়েছিল। কচি শিশু মন সেদিন সারাদিন আর রাত ভরে অপেক্ষা করেছিল তার বাবার জন্য। বর্বররা তার আহত বাবাকে আর ফিরিয়ে দেয়নি। নির্মমভাবে হত্যা করল জগন্নাথ হলের মাঠে।

 ঘটনার পর চৌদ্দ দিন পর্যন্ত শিববাড়ীতে পড়ে ছিল মধুবাবুর ছেলে, পুত্রবধূ আর স্ত্রীর লাশ।