পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৫৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○の° বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড মিলিটারী এসেছে এ সংবাদ পেয়েই তিনি ইস্পাহানীকে টেলিফোন করলেন। কি কথা হয়েছে কেউ জানে না। শুধু দেখা গেল সংক্ষিপ্ত কথা শেষ হওয়ার পর তিনি চুপচাপ টেলিফোন রেখে দিচ্ছেন। আলবদররা এদিকে দরজা ধাক্কাচ্ছে। তিনি বললেন দরজা খুলে দাও। একথা বলে উপরে বেডরুমে গেলেন; স্ত্রীকে বললেন, শিগগির আমাকে কিছু টাকা দাও।” বলে তিনি প্যান্ট পরতে লাগলেন। তাঁর স্ত্রী তখন বললেন, টাকা দিতে বলে তুমি যাচ্ছো কই? শহীদুল্লাহ কায়সার বললেন, ‘না একটু ভালো পোষাক পরে নেই।” স্ত্রী তাঁকে ঘরের বাইরে যেতে দেবেন না। কিন্তু তিনি যাবেনই। স্ত্রীকে বললেন, “আমাকে না পেলে ওরা বাসার সবাইকে মারবে।’ ইতিমধ্যে যিনি দরজা খুলে দিয়েছেন, তাঁকে আলবদররা সিড়ির কাছে বেঁধে রেখে সোজা দোতলায় উঠে তাঁর বেডরুমে ঢুকে পড়লো। বেডরুমটা বেশ বড়। অন্য এক দরজার কাছে শহীদুল্লাহ কায়সার দাঁড়িয়ে। ঘরের মাঝামাঝি তাঁর স্ত্রী। আলবদররা ঘরে ঢুকে শহীদুল্লাহ সাহেবকে দেখতে পেলো না। তাঁর স্ত্রীকে একলা ঘরে দেখে তারা বেরিয়ে যাবার উদ্যোগ করলো। এমন সময় পর্দার কাছ থেকে শহীদুল্লাহ কায়সার সামনে এসে দাঁড়ালেন। জিজ্ঞেস করলেন, “আপনারা কাকে চান?” “আপনার নাম কি?” তারা পাল্টা জিজ্ঞেস করলো। ‘শহীদুল্লাহ কায়সার।’ সঙ্গে সঙ্গে তাঁর হাত ধরলো। আপনার সাথে কথা আছে|” বলে তারা তাঁকে বারান্দায় নিয়ে এলো। এদিকে বাসা জুড়ে হৈচৈ চীৎকার। আলবদররা তাঁকে টেনে-হিচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। এমন সময় শহীদুল্লাহ কায়সার কঠিন কণ্ঠে বললেন, “আমি তো যাচ্ছিই। আপনারা আমার হাত ধরবেন না।’ এ বলে তিনি একবার পিছন ফিরে সবাইকে দেখতে চাইলেন। কিন্তু আলবদররা তাঁকে সেই সুযোগ দেয়নি। সিরাজউদ্দিন হোসেন সিরাজের বিবৃতির উপর ভিত্তি করে এটি লেখা হয়েছে। (ইংরেজী থেকে অনুবাদ) সিরাজউদ্দিন হোসেন ছিলেন বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা সাংবাদিক। ইত্তেফাকের মঞ্চে নেপথ্যে’ কলামটি তিনিই লিখতেন। ১৯৭১ সনের ১১ই ডিসেম্বর ভোর ২-৪৫ মিনিটে পাকিস্তানী সৈন্যদের নির্দেশে একদল উর্দুভাষী পাওয়া যায়নি। জনাব হোসেন সপরিবারে ৫ নম্বর চামেলীবাগে থাকতেন। জনৈক ডাক্তার ছিলেন এ বাসার মালিক। দরজা খুলে দিলে দুষ্কৃতকারীরা বন্দুক উচিয়ে তাকে তার বাবার ঘর দেখিয়ে দিতে বলে। ঠিক এই সময় বেগম হোসেন বেডরুমের দরজা খুলে বের হন। সিরাজউদ্দিন হোসেনের উপর তখন একজন দুষ্কৃতকারীর নজর