পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৯ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড প্রহর গুনেছি। এভাবে ২৭শে, ২৮শে ও ২৯শে মার্চ চলে যায়। আমাদেরকে তৃষ্ণা মিটানোর জন্য এক ফোঁটা পনি দেওয়া হয় নাই, আর কোন খাদ্যও দেওয়া হয় নাই। আর ২৯শে মার্চ বিকালে আমাদের তৎকালীন জেলা পুলিশ সুপার ই, এ, চৌধুরী সাহেব রমনা থানায় এসে আমাদের নাম তালিকাভূক্ত করলেন এবং আমাদের জন্য কিছু টাকা দিলেন নিজ পকেট থেকে। কিন্তু তখন বাহিরে কার্ফ থাকায় আমরা বেরুতে পারি নাই। পরের দিন ৩০শে মার্চ আমি আমার তেজগাঁওস্থিত বাড়িতে চলে যাই। এরপর আমি বাংলার মুক্তি সংগ্রামকে সাহায্য করার একমাত্র আকাঙ্খায় এবং আমার পরিবারের নিরাপত্ত ও অস্তিত্ত্ব রক্ষার উদ্দেশ্যে আমি পুনরায় থানায় যোগাযোগ করি। আমাদের থানা তখন বিহারী রাজাকার ও পাক সেনাদের দখলে ছিল। ওরাই থানার সর্বময় প্রভু ছিল। আমাদের হাতে কোন রাইফেল দেওয়া হতো না, শুধু লাঠি দেওয়া হতো মাত্র। আমরা দেখেছি, হতো, প্রতিদিন বিহারীরা এই নিরিহ বন্দীদের উপর অত্যাচার চালাতো। অনেক বন্দীকে সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হতো। যে সকল বন্দীকে থানা থেকে নিয়ে যাওয়া হতো ওদের অধিকাংশই ফিরে আসতো না। ওদেরকে মেরে ফেলা হতো। পাক সেনা বিহারি ও বেইমান বাঙ্গালী রাজাকাররা এভাবে ১৯৭১ সনের নভেম্বর মাস পর্যন্ত অত্যাচার চালাতে থাকে। ডিসেম্বরে মুক্তি বাহিনী ও মিত্ৰশক্তির সম্মিলিত আগমনের মুখে পাক পশুরা রাজারবাগের দিকে পালিয়ে যায়। আমরা এ থানায় কর্তব্যরত থাকাকালে মুক্তি বাহিনীকে নিয়মিত ংবাদ দিয়েছি, বন্দীদের সাহায্য করেছি- এ ভাবে আমরা বাংলার মুক্তি সংগ্রামকে মনে-প্ৰাণে কার্যকলাপে সবদিক দিয়ে সর্বতোভাবে যাথাসাধ্য সাহায্য করেছি। স্বাক্ষর/ Հծ-ծ-Գ8