পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

H8 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড ll N N ! রঞ্জিত (লাল বাহাদুর) ডোম সুইপার কলোনী নারিন্দা শাহ সাহেব লেন থানা-সুত্রাপুর, ঢাকা ১৯৭১ সনের ২৬শে মার্চ সকাল দশটার সময় ঢাকা পৌরসভার হেলত অফিসার আনোয়ার সাহেব ঢাকা পিলখানার চোদটুলি সুইপার কলোনী থেকে আমাদের সুইপার ইন্সপেক্টর পাঞ্চা, ডোম সবুজজী, দরবারী, মহাবীর ও মুসু ডোমকে নিয়ে আমাদের এই সুইপার কলোনীর দক্ষিণ দিকের প্রবেশপথের সম্মুখে দাঁড়িয়ে “গনেশ, লাল, বদনেস, রণজিত, কানাই, “বলে চিৎকার করে ডাকতে থাকলে আমরা সবাই যার যার ঘর থেকে বের হয়ে এসে দেখতে পেলাম ঢাকা পৌরসভার একটি জীপে ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটির তৎকালীন চেয়ারম্যান মিঃ সালামত আলী খান শুর, প্রশাসনিক অধিকর্তা মিঃ ইদ্রিস চিৎকার করে বলছেন, ঢাকার রাজপথে, বিভিন্ন জায়গায় বহু লাশ পড়ে আছে, তোমরা বের হয়ে আস, সে সব লাশ অবিলম্বে তুলে ধলপুর ময়লা ডিপোতে ফেলে দাও। আমি, পরদেশী, গনেশ, চুন্ন, আমরা সবাই মিটফোর্ড লাশ ঘর থেকে ২৮শে মার্চ সকলে দুট্টাক লাশ তুলে দলপুর ময়লা ডিপোতে ফেলেছি। অধিকাংশ লাশ পচে, ফুলে বিকৃত ও বীভৎস হয়ে গিয়েছিল। ২৯শে মার্চ আমরা প্রথম মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে দুট্টাক লাশ তুলেছি। এরপর আমাদের দুদিনের ছুটি দেওয়া হয়। তিনদিন পর আমরা রমনা কালিবাড়ী থেকে পাঁচটি পচা লাশ তুলে ট্রাকে চান মিয়া ও সুইপার ইন্সপেক্টর পঞ্চমকে ধরে নিয়ে মারধর করে। সুপারভাইজারকে চপোটাঘাত করে রাস্তায় চোত, শালা হারামী, শালা তেরপল লাগা লো।” পরের দিন আমি, ছাখিল, পরদেশী, চুন্ন সবাই মিলে শাঁখারী বাজারে কোর্টের প্রবেশপথে অগ্রসর হতে চাইলে আমাদের সেখানে জুলন্ত আগুনের অদূরে প্রহরারত পাক ঘরবাড়ি, মূল্যবান আসবাবপত্র জুলছে। আমরা ট্রাক নিয়ে মন্দিরের ভিতর দুজন যুবকের পচাগলা লাশ তুলেছি। লাশ পচে পোক হয়ে গিয়েছিল। গলিত লাশ দেখে আমরা ভীত হয়ে পড়েছিলাম। কোন লোকজন ছিল না, চারিদিক নীরব নিস্তব্ধ, শ্মশানের হাহাকার দেখলাম। প্রতিটি ঘর থেকে আমরা শিশু কিশোর, বৃদ্ধযুবা, যুবক-যবতীর পচা, গলিত লাশ তুলেছি। আমাদের সাথে আরও দুই দল ডোম ঢাকা পৌরসভার দুটি ট্রাকে লাশ তুলে ধলপুর ময়লার ডিপোতে ফেলেছি। এরপর আমরা সদরঘাট বুড়ীগঙ্গা নদীর পাড়, শ্যামবাজার ঘাট, বাদামতলী ঘাট থেকে লাশ তুলেছি। আমরা নদীর ঘাট থেকে যে সকল পচা, ফুলা, গলিত লাশ তুলেছি তার অধিকাংশ ছিল চোখ ও হাত-পা বাঁধা যুবকের লাশ। এরপর লালকুঠির ভিতর থেকে লুঙ্গি পরা দু’জন যুবকের পচা ও গলিত লাশ পেয়েছি, বাংলাবাজার, প্যারীদাস রোডের কয়েকটি বাড়ী থেকে আমরা লাশ তুলেছি। এরপর আমরা বনগ্রাম এলাকার রাস্তা থেকে কয়েকটি পচা লাশ তুলেছি। কমলাপুর থেকে আমরা ট্রেনযাত্রীদের লাশ তুলেছি, আমরা মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা থেকে শ্রমিকদের বহু লাশ তুলেছি। টিপসহি রঞ্জিত br-( — Գ8