পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Ջ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড l 이 Ill মিসেস রাবেয়া খাতুন সুইপার, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, ঢাকা। ১৯৭১ সনের ২৫শে মার্চ রাতে হানাদার পাঞ্জাবী সেনারা যখন রাজারবাগ পুলিশ লাইনের উপর অতর্কিতে হামলা চালায় তখন আমি রাজারবাগ পুলিশ লাইনের এস, এফ, কেন্টিনে ছিলাম। আসন্ন হামলার আর ট্যাঙ্কের অবিরাম কানফাটা গর্জনে আমি ভয়ে ব্যারাকের মধ্যে কাত হয়ে পড়ে থেকে থরথরিয়ে কাঁপছিলাম। ২৬শে মার্চ সকালে ওদের কামানের সম্মুখে আমাদের বীর বাঙ্গালী পুলিশ বাহিনী বীরের মত প্রতিরোধ করতে করতে আর টিকে থাকতে পারি নাই। সকালে ওরা পুলিশ লাইনের এস, এফ, ব্যারাকের চারদিকে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং ব্যারাকের মধ্যে প্রবেশ করে বাঙ্গালী পুলিশদের নাকে, মুখে, সারা দেহে বেয়নেট ও বেটন চার্জ করতে করতে ও বুটের লাথি মারতে মারতে বের করে নিয়ে আসছিল। ক্যান্টিনের দেওয়া হয় এবং আমার উপর প্রকাশ্যে পাশবিক অত্যাচার করছিল আর কুকুরের মত অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছিল আমার উপর উপর্যুপরি পাশবিক অত্যাচার করতে করতে যখন আমাকে একেবারে মেরে ফেলে দেওয়ার উপক্রম হয় তখন আমার বাঁচবার আর কোন উপায় না দেখে আমি আমার প্রাণ বাঁচাবার জন্য ওদের পায়ে পড়ি তোমরা আমাকে মেরো না, মেরো না, মেরো না, আমাকে মেরে ফেললে তোমাদের পুলিশ লাইন রক্ত ও লাশের পচা গন্ধে মানুষের বাস করার অযোগ্য হয়ে পড়বে। তখনও আমার উপর এক পাঞ্জাবী কুকুর, কুকুরের মতই আমার কোমরের উপর চড়াও হয়ে আমাকে উপযুপরি ধর্ষণ করছিল। আমাকে এভাবে ধর্ষণ করতে করতে মেরে ফেলে দিলে রাজারবাগ পুলিশ লাইন পরিষ্কার করার জন্য আর কেউ থাকবে না একথা ভেবে ওরা আমাকে ছেড়ে দিয়ে আমাকে এক পাঞ্জাবী ধমক দিয়ে বলতে থাকে, ঠিক হয়, তোমকো ছোড় দিয়া যায়েগা জারা বাদ, তোম বাহার নাহি নেকলেগা, হারওয়াকত লাই পার হাজির রাহেগা। একথা বলে আমাকে ছেড়ে দেয়। পাঞ্জাবী সেনারা রাজাকার ও দালালদের সাহায্যে রাজধানীর স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকা এবং অভিজাত জনপদ থেকে বহু বাঙ্গালী যুবতী মেয়ে, রূপসী মহিলা এবং সুন্দরী বালিকাদের জীপে, করছিলাম দেখলাম আমার সম্মুখ দিয়ে জীপ থেকে আমী ট্রাক থেকে লাইন করে বহু বালিকা যুবতী ও মহিলাকে এস, এফ কেন্টিনের মধ্য দিয়ে ব্যারাকে রাখা হল। বহু মেয়েকে হেডকোয়ার্টার বিল্ডিং-এ উপর তালায় রুমে নিয়ে যাওয়া হল, আর অবশিষ্ট মেয়ে যাদেরকে ব্যারাকের ভিতর জায়গা দেওয়া গেলা না তাদের বারান্দায় দাঁড় করিয়ে রাখা হল। অধিকাংশ মেয়ের হাতে বই ও খাতা দেখলাম, অনেক রূপসী যুবতীর দেহে অলঙ্কার দেখলাম, তাদের মধ্যে অধিকাংশ মেয়ের চোখ বেয়ে অঝোরে অশ্র পড়ছিল। এরপরই আরম্ভ হয়ে গেল সেই বাঙ্গালী রানীদের উপর বীভৎস ধর্ষণ। লাইন থেকে পাঞ্জাবী সেনারা কুকুরের মত জিভ চাটতে চাটতে ব্যারাকের মধ্যে উম্মত্ত অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে প্রবেশ করতে লাগলো। ওরা ব্যারাকে ব্যারাকে প্রবেশ করে প্রতিটি যুবতী, মহিলা ও বালিকার পরনের কাপড় খুলে একেবারে উলঙ্গ করে মাটিতে লাথি মেরে ফেলে দিয়ে বীভৎস ধর্ষণে লেগে গেল। কেউ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেই নিরীহ বালিকাদের উপর ধর্ষণে লেগে গেল, আমি ব্যারাকে ড্রেন পরিষ্কার করার অভিনয় করছিলাম আর ওদের বীভৎস পৈশাচিকতা দেখছিলাম। ওদের উম্মত্ত উল্লাসের সামনে কোন মেয়ে কোন শব্দ পর্যন্তও করে নাই, করতে পারে নাই। উন্মত্ত পাঞ্জাবী সেনারা এই নিরীহ বাঙ্গালী মেয়েদের শুধুমাত্র ধর্ষণ