পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫২ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড lこS) l কামিনী কুমার দাস সার্কেল অফিসার (ডেভেলপমেন্ট) রায়পুরা, ঢাকা আমরা রায়পুরা থানায় তখন ২২টি ইউনিয়ন ছিল। বর্তমানে এখানে ২৮টি ইউনিয়ন। এখানে ৪ লাখ লোকের বাস। রায়পুরা থানায় ২২টি ইউনিয়নের মধ্যে মেঘনা নদীর দ্বীপ চরে ৫টি ইউনিয়ন(বর্তমানে ৬টি অবস্থিত)। এলাকা ১৫৪ বর্গমাইল। অত্র থানার পরিধির মধ্যে ৫টি রেলওয়ে ষ্টেশন আছে। আমার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাক বাহিনীর হেড কোয়ার্টার ছিল। তখন হেডকোয়ার্টর হতে হানাদারদের পৈশাচিক কার্যকলাপ পরিচালনা করত। চর এলাকার দুটি ইউনিয়ন ও বাকি ইউনিয়নের মধ্যে ১৫টি ইউনিয়নে প্রজুলন কার্য চালায় হানাদাররা। যেহেতু রায়পুরা থানার মধ্যে ভাগ দিয়ে রেল রাস্তা অবস্থিত। ফলে রেল রাস্তার উভয় দিকের গ্রাম ও অভ্যন্তরেও পাক হানাদাররা বাড়ীঘর জুলিয়ে দেয় ও নৃশংসভাবে জনসাধারণকে হত্যা করে। অত্র থানায় বেলাব ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধাদের সহিত পাক বাহিনীর প্রচণ্ড সংগ্রাম চলে। ইহা ব্যতীত মীর্জানগর ইউনিয়নের হাটুভাঙ্গা ও মোছাপুর ইউনিয়নের রামনগর গ্রামে কয়েকবার পাক বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের খণ্ড যুদ্ধ হয়। পাক বাহিনীকে ঘায়েল করা হয় এবং কয়েকজন পাকবাহিনী নিরস্ত্র জনতার হাতে মোছাপুর ইউনিয়ন ও মীর্জানগর ইউনিয়নে ধরা পড়ে। তাদের পরে হত্যা করা হয়। থানা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাক বাহিনীরা ছাউনী খুলে থানাব্যাপী জনসাধারণের মাঝে সন্ত্রাসের সৃষ্টি করে এবং নিরীহ জনসাধারণকে হত্যা করে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কবরস্থ করে। গণকবর এখনও বিদ্যমান রয়েছে। কয়েকজন জোরপূর্বক ধর্মান্তর করে। ধর্মান্তরিত লোককেও বেদম প্রহার করে অত্যাচার করে এবং একজনকে হত্যা করে। থানার প্রত্যেকটি বাজার ওরা লুট করে। এ ছাড়াও গ্রামে গ্রামে ঢুকে হানাদাররা রাজাকারদের সহায়তায় লুটতরাজ করেছে। থানা পুলিশ ষ্টেশনও হানাদারদের প্রজুলন থেকে বাদ পড়েনি। স্বাক্ষর/ ৬/১১/৭৩