পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৬০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

580 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খন্ড শিরোনাম উৎস তারিখ ৮৫। মুজিব নগর স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে পুলিশদের | মুজিব নগর স্বরাষ্ট্র দফতর | ....... Տծ ԳՖ উদ্দেশ্যে প্রচারিত একটি নির্দেশ নামা মুজিবনগর স্বরাষ্ট দপ্তর বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের বীর পুলিশ ভাইয়েরা, সাড়ে সাত কোটি নিরস্ত্র বাঙ্গালী আজ মরিয়া হয়ে ইয়াহিয়া খানের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন । আমরা বাংলাদেশের সন্তান, আমরা বাঙ্গালী, আমরা বাংলাদেশের পুলিশ, আমরা মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষা করার দায়িতু আমাদের । অতীত এবং বিগত ২৫ শে মার্চ থেকে পাকফৌজ বাংলাদেশে যে নিধনযজ্ঞ ও বর্বরতা চালিয়েছে তার নজীর ইতিহাসে নেই। সোনার বাংলা আজ এক প্রেতপুরী । সেখানে এখন কবরের শান্তি বিরাজ করছে। এই হত্যাযজ্ঞের প্রথম শিকার হয়েছিল বাংলার পুলিশ বাহিনী । রাজারবাগ, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, কুমিল্লা ও অন্যান্য জেলা সমূহের পুলিশ বাহিনীকে কিভাবে মেশিনগানের গুলিতে ও বোমার আঘাতে হত্যা করা হয়েছে তার করুণ দৃশ্য আমরা কোনদিন ভুলতে পারব না। আপনার স্বচক্ষে দেখেছেন নারীহত্যা, নারীধরষন, শিশু-ছাত্র-শ্রমিক, বুদ্ধিজীবি ও শিল্পী হত্যার বীভৎস দৃশ্য । হারিয়েছে আমরা প্রিয়জন, আত্মীয় স্বজন, বেদনাক্লিষ্ট জীবনের সব সঞ্চয় ও সম্বল। ধ্বংসের ঢেউ শহর বন্দর ছাড়িয়ে এখন পৌছেছে গ্রামে-গ্রামান্তরে । রাস্তাঘাটে হাটে মাঠে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে নিরীহ বাঙ্গালী পুলিশ বাহিনীকে, ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে তাদের পরিবারকে দুঃখের অতল সাগরে ৷ এই গণহত্যা ও ধ্বংসের তুলনা ইতিহাসে মেলেনা। তাই আজ বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ বজ্ৰকণ্ঠে আওয়াজ তুলেছেন- স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে পাকফৌজকে দাঁড়াতে দেবে না । পশ্চিম পাক ফৌজের সর্বশেষ প্রাণীটি বাংলাদেশকে থেকে বিতাড়িত না হওয়া পর্যন্ত আমরা সংগ্রাম চিালিয়ে যাব। হালকা অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী মেশিনগান, ট্যাঙ্ক ও বোমার মুখে যে বীরত্ব দেখিয়েছে তা কখনও ভুলা যায় না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রামে পুলিশের ত্যাগ ও অবদান ইতিহাসে সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে । বাংলাদেশের পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে দেয়ার জন্য পুলিশ কর্তাদেরকে মেশিনগানের মুখে রেখে বাধ্য করা হয়েছে একথা ঘোষনা করতে- যেন বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী ইয়াহিয়ার জঙ্গী শাসকদের কাজে যোগদান করেন । মুক্তিফৌজের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে আঘাত হানার জন্যই এই হীন প্রচেষ্টা । এই ঘোষনা বা ডাকে বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী সাড়া দেবেন না নানা কৌশলে পুলিশ বাহিনীকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করে ফেলাই পাকফৌজের উদ্দেশ্য- একথা আমাদের ভুললে চলবে না। একবার ভেবে দেখুন- কেন পাকপৌজ আমাদের সহকর্মী পুলিশ ভাইদেরকে অকাতরে নৃশংসভাবে হত্যা করছে- কেন তারা বাংলাদেশের পুলিশ লাইন পুড়িয়ে জুলিয়ে ধ্বংস করেছে- কেন হাজার হাজার পুলিশকে দেশছাড়া করেছে। জঙ্গী সরকার অস্ত্রের শক্তিতে