পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৬৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

669 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খন্ড সিলেট সেক্টরে মুক্তিবাহিনী গত ১২ও ১৩ই আগষ্ট ১শত হানাদার সৈন্য খতম করেছে। এর আগে মুক্তিযোদ্ধারা জুরি, কালীহাতী, কাংলি ও সবুজপুরে তৎপরতা চালান। মুক্তিবাহিনী তাদের কাছ থেকে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছেন। গত ৯ই আগষ্ট অত্র জেলার উত্তর-পূর্ব এলাকায় শাহবাজপুর মুক্তিবাহিনীর সাফল্যজনক আক্রমণে প্রায় ৫০ জন পাক সৈন্য খতম হয়েছে। গেরিলা যোদ্ধারা ৪ জন পাকিস্তানী সৈন্যকে জীবন্ত অবস্থায় আটক করতে সক্ষম হয়েছেন। গত ৮ই আগষ্ট ঝিকরগাছার নুলিয়ানি গ্রামে হানাদার সৈন্যরা লুটপাট করতে গেলে একজন মুক্তিযোদ্ধা একটি বাগান থেকে গ্রেনেড দিয়ে আক্রমণ চালিয়ে একজন হানাদারকে খতম করেন। স্বাধীনতাকামী যোদ্ধারা হালকা মেশিনগান ও রাইফেল দিয়ে অন্য একটি আক্রমণে ৩ জন শত্রু সৈনকে হতাহত করেন। হানাদার সৈন্যরা এর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য উক্ত গ্রামে লুটপাট ও নির্যাতন চালাতে থাকে। গেরিলা যোদ্ধারা পুনরায় আক্রমণ চালিয়ে ২ জনকে খতম ও ২ জনকে আহত করেন। গত ৯ই আগষ্ট (সোমবার) যশোহরের নাভারণ এলাকায় গেরিলা যোদ্ধারা রাজাকারদের উপর এক অতর্কিত হামলা চালান। এতে ৯৩ জন শক্রনিহত ও বহু আহত হয়। পরের দিন ভোর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা একটি সেতু পাহারারত রাজাকারদের উপর আক্রমণ চালিয়ে ৪ জনকে হত্যা করে। অন্যান্যরা কোন রকমে পালিয়ে যায়। স্বাধীন বাংলা বেতারের খবরে প্রকাশ, গত ৮ই আগষ্ট সিলেটের লাতু অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর বীর যোদ্ধাদের সাথে হানাদার পাকিস্তানী সৈন্যদের আট ঘন্টাব্যাপী প্রচন্ড সংঘর্ষ হয়েছে। এই সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধারা জীবন পণ করে হানাদার শত্রদের উপর প্রবল আক্রমণ চালিয়ে যান এবং ৫৫ জন হানাদারকে খতম ও ৬৫ জনকে গুরুতর রূপে আহত করেন। সংঘর্ষে ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হয়। সম্প্রতি সিলেটের কেরামতগড়, রহিমপুর, বিয়ানীবাজার ও মৌলভীবাজারে বিভিন্ন সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ৬ জন পাকিস্তানী সৈন্য ও ১ জন রাজাকার খতম হয়েছে। শিববাড়ী অঞ্চলে এক সংঘর্ষে ১১ জন পাকিস্তানী সৈন্য প্রাণ হারায় ও ১৩ জন মারাত্মকভাবে আহত হয়। চিলমারী থানার উপর অতর্কিত আকমণ চালিয়ে গেরিলারা একজন অফিসারসহ ৫ জন পশ্চিম পাকিস্তানী পুলিশকে গুলী করে হত্যা করেন। সম্প্রতি বানিয়াবাজারে নদীর কাছে একটি লঞ্চ, দুটি স্পিড বোড ও ১৮টি নৌকা নিয়ে পাকিস্তানী সৈন্যরা যাওয়ার সময় মুক্তিবাহিনী তাদের উপর অতর্কিত আক্রমণ চালান। এই আক্রমণে ৭৮ জন পাকিস্তানী সৈন্য খতম হয়। মুক্তিযোদ্ধারা সৈন্যবাহী একটি স্পিড বোড ও ১৭টি নৌকা ডুবিয়ে দিতে সক্ষম হন। এই এলাকায় অন্য একটি সংঘর্ষে ২১০ জন শত্রুসৈন্য মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে প্রাণ হারায়। অন্য একটি সংঘর্ষে একজন দুঃসাহসী মুক্তিযোদ্ধা মেশিন গান হাতে নিয়ে শক্রবাঙ্কারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ১৫ জন হানাদারকে খতম করেন। টাঙ্গাইলে গেরিলা যোদ্ধারা পাওয়ার হাউসের উপর সম্প্রতি গ্রেনেড আক্রমণ চালান। অন্য এক সংঘর্ষে গেরিলারা টাঙ্গাইলে ৯ জন শত্রুসৈন্যকে খতম করেন। গত সপ্তাহে পাগলা দেওয়ানহাটে এক সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধারা ৩ জন হানাদারকে খতম করেন। আলমপুরে মুক্তিবাহিনীর সাথে গুলি বিনিময়ে ১৩ জন পাকিস্তানী সৈন্য নিহত ও ৭ জন গুরুতর রূপে আহত হয়। রাজশাহী সেক্টর থেকে প্রাপ্ত সংবাদে প্রকাশ, মুক্তিবাহিনীর কমান্ডোরা ৪ঠা আগষ্ট রাজশাহী থেকে ৪০ মাইল উত্তর-পূর্ব আড়ানী রেল ষ্টেশনে একটি রাজাকার বাহিনীর উপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। মর্টার ও মেশিন গানের গুলীতে শত্রসেনার ৩ জন নিহত হয় এবং অন্যান্যরা পালিয় যায়। মর্টারের গোলাতে ষ্টেশনটি