পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৭০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



676

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খণ্ড

\ দেবীদ্বার \

 কুমিল্লার দেবীদ্বার ও মুরাদনগর থানার সংযোগ স্থলে মুক্তিবাহিনী এবং পাক বাহিনীর এক সংঘর্ষে ১৬ জন সৈন্যসহ ২৪ জন রাজাকার নিহত হয়েছে। প্রকাশ, ৪ জন শত্রু সৈন্য ঘটনাস্থল থেকে প্রাণ নিয়ে পালিয়েছে।  আমাদের প্রতিনিধি জানিয়েছেন যে, দেবীদ্বার খানার লতাসীয় গ্রামে পাঞ্জাবী সৈন্য ও তাহদের পাচাটা রাজাকার বাহিনী ৭ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা করেছে। হানাদাররা অতঃপর গ্রামটি সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত করে ও ধনসম্পত্তি লুটপাট করে।

\ সোনাগাজি \

 গত ১৫ই আগষ্ট মুক্তিফৌজের এণ্টি-ট্যাঙ্ক মাইনের ঘায়ে নোয়াখালীর সোনাগাজীতে পাক বাহিনীর একটি জীপ উড়ে যায়। ফলে পাক বাহিনীর চারজন অফিসার নিহত হয়।

\ দাউদকান্দি \

 'বাংলাদেশের' রণাঙ্গন প্রতিনিধি লিখেছেন যে, গত ১৫ই আগষ্ট মধ্যেরাত্রে কুমিল্লায় দাউদকান্দি  ফেরীঘাটটি মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছেন। ফলে কুমিল্লা-নোয়াখালী-চট্টগ্রাম সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে গেছে। গেরিলারা একটি ফেরী নৌকা (২শত ফুট দৈর্ঘ, এক সাথে ৮টি গাড়ী বহন করে) ডিনামাইট দিয়ে জুলে ডুবিয়ে দিয়েছেন। নিকটস্থ ফেরী গুদামটি ধ্বংস হয়েছে। ফেরীঘাটে টহলদাররত ৬ জন রাজাকার ও ১ জন পাক পুলিশও সংঘর্ষে নিহত হয়েছে।

\শালদা নদী \

 শালদা নদী অঞ্চলে পাক হানাদাররা ভৌগলিক ও রনকৌশলগত অবস্থান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ও সুবিধাজনক ভেবে প্রচুর সৈন্য মোতায়েন করেছিল। এই রণাঙ্গনে মুক্তিফৌজ প্রায় ৪ শত ৪৫ বর্গমাইল এলাকা মুক্ত করে নয়া পর্যায়ে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছেন। হানাদাররা এ এলাকা করার জন্যে উজানীসার, কুঠী চৌমুহনী,শশীদল ভাগড়া এবং সিএণ্ডবি রোড থেকে মুক্তাঞ্চলের মুক্তি বাহিনীর অবস্থানের উপর কামান থেকে গোলাবর্ষণ করছে। কুমিল্লার সাথে রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় হানাদারদের চলাচল পথ একমাত্র সিএণ্ড বি। হানাদাররা নদীপথে তিনটি দিক দিয়ে মুক্ত অঞ্চলে প্রবেশ করার চেষ্টা করছে। মুক্তিফৌজ সতর্কতা ও সাহসিকতার সাথে তা ব্যর্থ করছেন।



-বাংলাদেশ, ২৩ আগষ্ট, ১৯৭১
* * * * *

চুয়াডাঙ্গার অদুরে ৭০ জন পাকসৈন্য খতম

 কৃষ্ণনগর, ২৩ শে আগষ্ট-মুক্তিফৌজ গত শুক্রবার কুষ্টিয়া জেলার চুয়াডাঙ্গার ২২ কিলোমিটার উত্তরে আলমডাঙ্গায় পাক বাহিনীর সরবরাহ ঘাঁটি আক্রমণ করে ৭০ জন পাসৈন্যকে খতম করে। আহত পাক সৈন্যের সংখ্যা ৩০ জন। মুক্তিফৌজের সূত্র থেকে এ খবর পাওয়া গেছে।

 মুক্তিফৌজের আক্রমণে বেসামাল হয়ে পাক বাহিনী অস্ত্রশস্ত্র ফেলে ঘাঁটি ত্যাগ করে। পাকবাহিনীর এই সব অস্ত্রশস্ত্র মুক্তিফৌজ দখল করে। সরবরাহ ঘাঁটিটি সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়েছে।



-যুগান্তর, ২৪ আগষ্ট, ১৯৭১