পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৭০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



677

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খণ্ড

মুক্তি বাহিনীর আক্রমণে পাক সৈন্যদের বিপর্যয়

 মুজিবনগর, ২৬ শে আগষ্ট (ইউ,এন, আই)- আজ বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনীর সদর সপ্তর থেকে প্রচারিত এক বুলেটিনে বলা হয়েছে যে, মুক্তিবাহিনী ২২ শে আগষ্ট থেকে বিভিন্ন রণঙ্গনে তৎপরতা চালিয়ে পঃ পাকিস্তানী সৈন্য, রাজাকার ও মুসলিম লীগ সমর্থকসহ ১৫০ জনকে খতম করেছেন।

 আহতদের মধ্যে পাক সেনাবাহিনীর ও আধা সামরিক বহু অফিসারেরাও আছেন। শুধু শ্রীহট্টের সিভিল হাসপাতালেই ১৫০ জন রাজাকারের চিকিৎসা করা হচ্ছে।

 এ ছাড়া মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা রেললাইন ও সেতু উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরা গাড়ী ও বৈদুতিক পাইলন ধ্বংস ও টেলিফোন সার্ভিস বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন।

চট্টগ্রাম বন্দরে তৎপরতা

 চট্টগ্রাম বন্দরে ১৬ই আগষ্ট হাজার টন ওজনের ‘আল-আববাস’ ও ১২৫০০ টনের আর একটি জাহাজ ডুবানোর সংবাদ সমর্থিত হয়েছে। মালবাহী বড় বজড়াকেও ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পাক সৈন্যের ঈগল বাহিনী

 যশোহর পাক সৈন্যরা ঈগল বাহিনী নামে একটি নতুন বাহিনী গঠন করেছে। বর্ষা শেষে মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক আকমেণ চলানোর জন্য এই বাহিনী গঠন করা হয়েছে।

 রংপুরের রায়গঞ্জ এলাকায় ২২ আগষ্ট গেরিলারা দুটি সেতু ধ্বংস করেছেন। পরের দিন ভুরুঙ্গামারি ও বাঘবান্দা এলাকায় পাক সৈন্যরদের সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর সংঘর্ষ হয়।

 শ্রীহট্টে ১৯ শে আগষ্ট মুক্তিবাহিনী জাফলং এলাকা থেকে পাক সৈন্যদের হটিয়ে দেন। সুনামগঞ্জ এলাকা থেকে তারা অস্ত্রশস্ত্র সহ দুজন রাজাকারকে আটক করেন। পাক সৈন্যদের যাতায়াতকে বিঘ্নিত করার জন্য জকিগঞ্জ এলাকায় কুশিয়ারা নদীর বাঁধটিকেও উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

ঢাকায় মাইন বিস্ফোরণ

 ঢাকার বৈদ্যের বাজারে ট্যাংকবিধ্বংসী মাইন বিস্ফোরণে দুটি সামরিক জীপ ও একটি বেবী ট্যাক্সি ধবংস হয়েছে।

 ১১ জন পাক সৈন্য ও তিনজন রাজাকার খতম হয়েছে।

 ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে সোমবার তিনজন রাজাকার খতম হয়েছে এবং দুটি রাইফেল উদ্ধার করে গেছে।

 সরাইল মুসলিম লীগের পাণ্ডা ও পাক সৈন্যের সাগরেদ মান্নান মিয়াকেও গেরিলারা খতম করে দিয়েছেন।

 শ্রীহট্ট শহরে একাংশে নিম্প্রদীপ অবস্থা বিরাজ করছে। কারণ মুক্তিবাহিনী বৈদুতিক পাইলন ধ্বংস করে দিয়েছেন।

ধলেশ্বরীতেও জাহাজ ডুবি

 মুক্তিবাহিনী ১৯ শে আগষ্ট ঢাকার সাটুরিয়া থানা আক্রমণ করে চারজন খানসেনা ও পাঁচজন পুলিশকে খতম করেছেন।

 তারা ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছেন এবং কিছু অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছেন।