পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৭০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



680

 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খণ্ড

বিভিন্ন খণ্ডে চার শতাধিক পাক সৈন্য নিহত

 মুজিবনগর, ২৭ শে আগষ্ট-গত ২০ শে আগষ্ট থেকে ২৫শে আগষ্টের মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন খণ্ডে মুক্তিবাহিনীর গেরিলা আক্রমণে দুজন সামরিক অফিসারসহ চার শতাধিক পাকিস্তানী সৈন্য এবং প্রায় চল্লিশজন রাজাকার নিহত হয়েছে বলে এখানে মুক্তিবাহিনীর সদর দপ্তরে খবর এসেছে।

 খবরে বলা হয়েছে যে, মুক্তিযোদ্ধারা পাক বাহিনীর ১৯ জন সহযোগীকে হত্যা করেছে ও ৫ জন শত্রসৈন্যকে আটক করেছে।

 গেরিলারা এই সময়ে সৈন্য বাহিনীর ৯টি যান, ৪টি সড়ক সেতু, ৭টি রাইফেল, একটি মেশিনগান, ৮টি বোট,২টি গানবোট ও পাক সৈন্যদের ব্যবহৃত ২টি দেশী নৌকা ধ্বংস করে দিয়েছে।

 গেরিলারা যেসব অস্ত্র ও যানবাহন দখল করেছে তার মধ্যে আছে ৭টি রাইফেল, একটি মেশিনগান, ৮টি বন্দুক ও ৮টি দেশী নৌকা। কৃষ্ণনগরের খবরে প্রকাশ সীমান্তের অপর পার থেকে সেখানে খবর এসেছে যে, ২২ শে আগষ্ট কুষ্টিয়া জেলার দশনার কাছে মেটনা নামক এক জায়গায় একটি পাকিস্তানী প্লাটুনের উপর মুক্তিবাহিনীর অতর্কিত আক্রমণে একজন অফিসারসহ ১১ জন পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয়েছে।

 খবরে বলা হয়েছে যে, ঐ আক্রমণে মুক্তিবাহিনীর তরফে কেউ হতাহত হয়নি।

 গতকাল সীমান্তের অপর পার থেকে কৃষ্ণনগরে প্রাপ্ত আর একটি প্রকাশ ২৪ শে আগষ্ট ভারতের শিকারপুর সীমানা থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার অন্তর্গত একটি জায়গায় পাকিস্তানী সৈনদের একটি ঘাঁটির উপর মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে ১৭ জন পাক সৈন্য নিহত হয়েছে।

 খবরে প্রকাশ, মুক্তিবাহিনী ঘাঁটিটি দখল করে এবং সেখানে শত্রসৈন্যদের ফেলে যাওয়া অস্ত্রশস্ত্র অধিকার করে।



-আনন্দবাজার, ২৮ আগস্ট, ১৯৭১
* * * * *

মুক্তিফৌজের তৎপরতা

চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবেশ পথ বন্ধ

 মুজিবনগর, ৩০ শে আগষ্ট (ইউএন, আই)-আজ এখানে প্রাপ্ত সংবাদে জানা গেছে যে, বাংলাদেশ মুক্তিবহিনীর গেরিলারা কর্ণফুলী নদীতে মালবাহী একটি বড় বজড়া ডুবিয়ে দেওয়ার ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবেশ পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ১৩ নং জেটির ঠিক উল্টো দিকে বজরাটি ডুবানো হয়েছে।

 গত ১৬ই আগষ্ট ও ১৭ই আগষ্ট মুক্তিবাহিনীর অভিযানের সময় বজরাটি ডুবে যায়। ঐ সময় বন্দরে অবস্থিত কয়েকখানা জাহাজও ডুবিয়ে দেওয়া হয় এ সকল জাহাজ ডুবিয়ে দেওয়ার ফলে বন্দরে কাজকর্ম সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।

৬ দিনে ১৯০ জন পাকণ্ডসেনা ও রাজাকার খতম

 আগরতলা থেকে প্রেরিত পি.টি আই-র খবরে প্রকাশ, গত ২৩শে আগষ্ট থেকে ২৮ শে আগষ্টের মধ্যে মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা মৈমনসিংহ, কুমিল্লা এবং নোয়াখালীর বিভিন্ন অঞ্চলে অন্ততঃ ১০০ রাজাকার এবং ১০ জন খানসেনাকে নিধন করেছেন। রাজাকার ও শত্রঘাঁটির উপর গেরিলাদের আক্রমণের বিশদ বিবরণ দিতে গিয়ে মুক্তিবহিনীর কমাণ্ড বলেছেন, গত ২৩ শে আগষ্ট কমাণ্ডারা মেশিনগান এবং মর্টার নিয়ে কুমিল্লায় বসুর হাটের কাছে একটি রাজাকার ঘাঁটির ওপর আক্রমণ চালিয়ে ১৫ জন আধা সামরিক স্বেচ্ছাসেবকসহ ৫০ জন রাজাকারকে হত্যা করে।