পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৭১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



687

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খণ্ড

খুরশীদ (নেভাল ফোর্স) প্রভৃতি সামরিক অফিসারের সাথে সাক্ষাৎ ঘটে। প্রতিটি ঘাঁটিতেই বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ আমাদের রণাঙ্গন প্রতিনিধিকে হাসি-মুখে অভ্যর্থনা জানান।

নোয়াখালীঃ

 ৯ই সেপ্টেম্বর মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা নোয়াখালী শহরের কুখ্যাত দাঙ্গা নায়ক গোলাম সারোয়ারকে হত্যা করেছেন। হ্যাণ্ড গ্রেনেড দিয়ে কমাণ্ডোরা এই ১৯৪৬ সালের নায়ককে হত্যা করেছেন। এতে স্থানীয় জনসাধারণ স্বাস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন।



-বিল্পবী বাংলাদেশ, ১২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
* * * * *

মুক্তিবাহিনীর সাফল্য

দু’জন কর্নেলসহ ৭ জন পাক অফিসার ধৃত

 গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের মুক্তিফৌজ পাকিস্তানের দুজন কর্নেলসহ সাতজন পদস্থ সামরিক অফিসারকে আটক করেছে। আটক পাক সামরিক অফিসারদের মধ্যে আছে লেঃ কঃ খিজির হায়াত খান, মেজর সাদেক নাওয়াজ, লেঃ আতাউল হাসান। এই অফিসাররা সকলেই বর্তমানে মুক্তিফৌজের হাতে বন্দী রয়েছে।



-সাপ্তাহিক বাংলাদেশ ১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
* * * * *

ঢাকা বিচ্ছিন্ন নগরী

 মুজিবনগর ১২ই সেপ্টেম্বর- মুক্তিবাহিনী ঢাকার সঙ্গে বাংলাদেশের অবশিষ্ট অংশের রেল ও সড়ক পথের যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। সেনাবাহিনীর কঠোর নিয়ন্ত্রণের ফলেও ঢাকার সঙ্গে বিভিন্ন জেলার রেল চলাচল প্রায় বন্ধ। বাংলাদেশের ভিতরে সন্ধ্যার পর থেকে সড়ক বা জল পথে সব রকম যানবাহন সম্পূর্ণরূপে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

 জানা গেছে, পাক বাহিনী শহরের কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা অবলম্বন করেছে। শহরের বাইরে যাবার সড়ক ও জলপথে 'ফটক' প্রথা প্রবর্তন করা হয়েছে ও সশস্ত্র জঙ্গী প্রহরী মোতায়েন রাখা হয়েছে।

 ট্যাঙ্ক ও ইলেকট্রিসিটির ষ্টেশনগুলিতে সেনাবাহিনী সদাসর্বদা প্রহরা দিচ্ছে। শহরে অসংখ্য নলকূপ বসানো হচ্ছে।

 ঢাকা টেলিভিশন সেণ্টার ও রেডিও পাকিস্তান প্রাঙ্গণে কঠোর প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ফরিদপুরের থানা জ্বালিয়েছে

 মুজিবনগর, ৯ই সেপ্টেম্বর- মুক্তিবাহিনীর গেরিলা তৎপরতার ফলে ফরিদপুরের নারা থানাটি জুলিয়ে দিয়ে এখানে পশ্চিম পাকিস্তানী একজন পুলিশ অফিসার, তিনজন কনষ্টেবল ও ষোলজন রাজাকারকে হত্যা করা হয়েছে এবং অনেক অস্ত্রশস্ত্রও দখল হয়েছে।

 সিলেট রণাঙ্গনের জয়ন্তীপুর থানার একজন পুলিশ অফিসার ও দুইজন কনষ্টেবলকে গেরিলারা হত্যা করেছে।

 রংপুর রণাঙ্গনে এই দিন হাতিবান্ধা, কালীঘাট ও চিলমারীতে গেরিলা বাহিনী অতর্কিত আক্রমণ চালাইয়া বহু খান সেনা হত্যা করেছে।