পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৭১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



690

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খণ্ড

ট্রেন ধ্বংস

 ফেনীর কাছে মুহুরীগঞ্জ গেরিলা যোদ্ধারা একটি ট্রেন উড়িয়ে দেয়। ফলে ট্রেনের ড্রাইভারসহ বহু সৈন্য খতম হয়।

 অন্যদিকে ময়মনসিংহ অঞ্চলে গেরিলা কায়দায় মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার সৈন্যদের একেবারে নাজেহাল করে ছাড়ছে। টাঙ্গাইলে গেরিলারা দুটি সৈন্য বোঝাই ষ্টীমার পুড়িয়ে দেন। এতে বেশকিছু পাকসেনা খতম হয়েছে।

 ঢাকায় পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গেরিলা যোদ্ধাদের জোর সংঘর্ষ চলছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।

 গত ৭ই সেপ্টেম্বরের পশ্চিম পাকিস্তান ষ্টার পত্রিকার খবরে প্রকাশ, গেরিলা যোদ্ধারা গত ৩ রা সেপ্টেম্বর শেষ রাত্রে ঢাকা ও খুলনার মধ্যে চলাচলকারী একটি ষ্টীমার আক্রমণ করে ৫ জনকে গুরুত্বরূপে আহত করেন।

 উক্ত খবরে প্রকাশ, শুক্রবার শেষ রাতে ঢাকার ৬৫ মাইল দূরে বরিশাল এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় উক্ত ষ্টীমারের উপর গেরিলা যোদ্ধারা গুলী বর্ষণ করেন।



-জয়বাংলা, ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
* * * * *

গত ১৫ দিনে সাতক্ষীরার সাড়ে ৬৩ মাইল মুক্ত

(ষ্টাফ রিপোর্টার)

 কলকাতা, ১৬ই সেপ্টেম্বর- গত ১৫ দিনে খুলনা জেলার সাতক্ষীরা মহকুমার সাড়ে ৬৩ বর্গমাইল অঞ্চল থেকে মুক্তিবাহিনী খান সেনাদের হটিয়ে দিয়ে মুক্ত এলাকা স্থাপন করেছে। গতকাল টাকীতে এই তথ্য বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া গেল। ঐ একই সময়কালের মধ্যে মুক্তিবাহিনী ১৯৭টি এ পি মাইন (যেগুলি পাক বাহিনী পুতে রেখেছিল) তুলে নিয়ে এসেছে, ৩ টন ওজনের চারটি পাক সামরিক গাড়ি ধ্বংস করেছে এবং তিনটি সীমান্ত চৌকি দখল করেছে।

 তাছাড়া আরও জানা গেছে মুক্তিবাহিনীর হাতে ১৭টি রাইফেল এবং ২,০০০টি ৩০৩ বুলেটসহ ৩০ জন রাজাকার বন্দী হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে ঐ অঞ্চলে রাজাকাররা মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে মোটামুটি সহযোগিতা করছে।



-কালান্তর, ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
* * * * *

রণাঙ্গনের খবর

(রণ-বার্তা পরিবেশক)

 বাংলাদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে দুর্ধর্ষ মুক্তিযোদ্ধাদের অপ্রতিহত অগ্রযাত্রা অব্যাহত রহিয়াছে। মুক্তিযোদ্ধাদের মেশিনগান আর মর্টারে গোলার অব্যর্থ আঘাতে খান সেনাদের প্রাণহীন দেহ মাটিতে লুটাইয়া পড়িতেছে। স্থল ও জলপথে স্বাধীনতা সঙগ্রামীদের মোকাবিলায় ব্যর্থ হইয়া হানাদার সেনারা দখলীকৃত এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিমান আক্রমণ শুরু করিয়াছে বলিয়া খবর পাওয়া যাইতেছে।

 বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন রণাঙ্গনে হানাদার সেনাদের ব্যতিব্যস্ত রাখা ছাড়াও ইহাদের নানাভাবে হয়রানী করিয়া চলিয়াছেন।