পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৭১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



694

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খণ্ড

দিনাজপুরে ৪২ জন শত্রুসৈন্য ও রাজাকার খতম

 গত ১৫ই সেপ্টেম্বর রাত্রে দিনাজপুরের বুড়িমারী গ্রামে মুক্তিযোদ্ধারা একজন ক্যাপ্টেনসহ ১৩ জন হানাদার সেনাকে খম করেছেন। ঐ রাত্রেই মুক্তিযোদ্ধারা আরেকটি সফল আক্রমণ চালিয়ে হেমকুমারীতে ৯ জন রাজাকারকে হত্যা করেন।

 গত ১৭ই সেপ্টেম্বর জলপাইগুড়ি জেলার চাউলহাটি সীমান্তের নিকটে, দিনাজপুরের পচাগড়, দেবীগঞ্জ ও ঠাকুরগাঁও খণ্ডে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাক ফৌজের প্রচণ্ড সংঘর্ষ হয়। কিছুদিন আগে অত্র এলাকায় মুক্তিবাহিনী কমপক্ষে ২০ জন পাকসৈন্যকে খতম করেন।

 স্বাধীনতাকামীরা পার্বতীপুর ও সান্তাহারের মধ্যে টেলিফোন যোগাযোগ নষ্ট করে দিয়েছেন।

রংপুরে ১২ জন খতম

 গত ১৩ই সেপ্টেম্বর রংপুরের ডিমলা এলাকায় গেরিলা যোদ্ধারা মাইন দিয়ে একটি ট্রাক উড়িয়ে দেন। ফলে ১২ জন হানাদার সৈন্য নিশ্চিহ্ন হয়। গেরিলা যোদ্ধারা আলিনগর এলাকায় কয়েকজন তাঁবেদারের বাড়ী আক্রমণ করে বহু অস্ত্র উদ্ধার করেছেন।

 মুক্তিযোদ্ধারা চিলমারীতে একটি পাক টহলদার দলের উপর হামলা করলে কয়েকজন দস্যু সৈন্য হতাহত হয়।

 গেরিলা যোদ্ধারা ১৩ ও ১৪ই সেপ্টেম্বর রাণীশঙ্কের ও ভুরুঙ্গামারী অঞ্চলে কয়েকজন সামরিক ও তাবেদার বেসামরিক সশস্ত্র লোককে হতাহত করেন।

রাজশাহীতে ৮০ জন খান সেনা হতাহত

 স্বাধীনতাকামীরা গত ১৭ই সেপ্টেম্বর ভোরে রাজশাহী ও নাটোরের মধ্যে দুটি বড় মাইন চার্জ করে একটি মালবাহী ট্রেনের ১২টি ওয়াগন লাইনচ্যুত করে। ফলে প্রায় ৫০ জন পাকিস্তানী সৈন্য নিহত ও আরও ৩০ জন আহত হয়।

চট্টগ্রামে টাগবোট ক্ষতিগ্রস্ত

 চট্টগ্রামে গেরিলা যোদ্ধারা ১১ই সেপ্টেম্বর শত্রুবাহিনীর একটি টাগবোট আক্রমণ করেন। তাঁরা বোটের পাইলটকে অপহরণ করে নিয়ে যান। বোটটি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

নোয়াখালীতে ৮৪ জন শত্রুসৈন্য নিহত

 গত ১৩ই সেপ্টেম্বর আমাদের দুঃসাহসিক যোদ্ধারা নোয়াখালীর একটি এলাকায় শক্র অবস্থানের ওপর এক অতর্কিত অভিযান চালিয়ে কমপক্ষে ১০৯ জনকে খতম ও ১৬ জনকে গুরুতর রূপে আহত করেছেন।

 সম্প্রতি ফেনীতে ৬ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে একজন মেজরসমেত ৫৮ জন পাক সেনা মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে খতম হয়েছে।

কুমিল্লা সেক্টরে ৭২ জন পাক সেনা নিহত

 গত ১৩ই ও ১৪ই সেপ্টেম্বর বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা সফল আক্রমণ চালিয়ে ৬০ জন পাক সৈন্য নিহত ও ২৪ জনকে গুরুতররূপে আহত করেন। কুমিল্লার সালদার, কায়েমপুর, লক্ষ্মীপুর, মীর্জানগর, রঘুরামপুর ও জগন্নাথদীঘিতে শক্রসেনার উপরোক্ত ক্ষয়ক্ষতি হয়।

 গত ১২ই সেপ্টেম্বর আখাউড়ার উত্তর-পূর্ব মুকুন্দপুরে মুক্তিবাহিনী শক্র সেনাবাহী একটি ট্রেন আক্রমণ করে বিধ্বস্ত করে দিয়েছেন। এতে ট্রেনের যাত্রী, একজন পাকিস্তানী সামরিক অফিসার, ইঞ্জিন ড্রাইভার ও এক ডজনেরও বেশি রাজাকার নিহত হয়েছে।