পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৭৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



708

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খণ্ড

কর্তব্যের কথা স্মরণ করাইয়া দেন। এই প্রসঙ্গে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠি কর্তৃক বাংলাদেশের মানুষকে পাকিস্তানের নামে ধোঁকা দেওয়ার এবং স্বাধীনতার নামে নিষ্ঠুর শোষন ও নির্যাতন নিপীড়নের মর্মম্ভদ কাহিনী তুলিয়া ধরেন। তিনি বাংলাদেশে হানাদার সৈন্যদের ঘৃণ্যতম গণহত্যার বর্ণনা দিতে গিয়া হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য অফিসারদের প্রতি আহবান জানান।

 অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বাঙালির শৌর্যবীর্য ও বীরত্বের উচ্ছসিত প্রশংসা কারিতে গিয়া বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের উপর মুক্তিকারী সাত কোটি মানুষের অটল আস্থা ও সমর্থন রহিয়াছে। পূর্বাহ্নে প্রধান সেনাপতি কর্নেল এমএজি ওসমানি অফিসারদের উদ্দেশ্যে ভাষনদান কালে তাহাদিগকে শৃঙ্খলা ও ন্যায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহবান জানান।

 বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমেদ, জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের বহুসংখ্যক সদস্য, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের উচ্চপদস্থ বহু সামরিক ও বেসামরিক কর্মচারী এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

 বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধাদের অফিসার পদে ট্রেনিং প্রাপ্তদের আনুষ্ঠানিক অভিষেক উৎসব এবং গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ হইতে তাঁহাদিগকে সনদ প্রদান অনুষ্ঠান ইহাই প্রথম।

 অভিষেক অনুষ্ঠান উপলক্ষে নির্মিত মনোরম মঞ্চে প্রধান সেনাপতি কর্নেল এমএজি ওসমানী এবং সামরিক একাডেমীর অধ্যক্ষ অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধান সৈয়দ নজরুল ইসলামকে অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করেন। 

-বাংলার বাণী, ১২ অক্টোবর, ১৯৭১
* * * * *

ঢাকা-চাটগাঁ রোডের গুরুত্বপূর্ণ সেতু ধ্বংস

 গত এক পক্ষকালে স্বাধীনতাকারী বীর যোদ্ধারা ময়মনসিংহ সেক্টরের জগন্নাথগঞ্জ ঘাটের নিকট একটি গ্রামে প্রায় একশ রাজাকারকে খতম করেছেন। এই আক্রমণে কয়েকজন ভীতবিহবল রাজাকার অস্ত্রশস্ত্রসমেত মুক্তি বাহিনীর হাতে আত্মসমর্পণ করে।

নোয়াখালী

 নোয়াখালীতে ফেনী অঞ্চলে এ মাসের গোড়ার দিকে মুক্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা নতুন কৌশল অবলম্বন করে শত্রুসৈন্যর ওপর মারাত্মক হামলা চালান। গত ৩রা অক্টোবর মুক্তিবাহিনীর দুঃসাহসী যোদ্ধারা ফেনীর কাছে মুহুরী নদী পেরিয়ে পরশুরাম ও অনন্তপুরে ছাউনি ফেলেন। পাকিস্তানীরা এ অবস্থায় মরিয়া হয়ে নিকট থেকে মুক্তিবাহিনীর ওপর আক্রমণের দুঃসাহস দেখায়। গেরিলা যোদ্ধারা অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সাথে নিজেদের মধ্যে আশ্চর্য সমন্বয় সাধন করে বীর মুক্তি সেনানীরা মর্টারসহ ছোট ভারী অস্ত্র নিয়ে প্রবল আক্রমণ হানে। প্রচণ্ড লড়াইয়ের পর ১৯ জন শক্রসেনা খতম হয়।

 নোয়াখালীর অনন্তপুরে মুক্তিবাহিনীর ৩টি ঘাঁটিতে হানাদার সৈন্যরা আক্রমণের দুঃসাহস দেখালে আমাদের অসমসাহসী বীর যোদ্ধারা তা প্রতিহত করতে এগিয়ে গেলে দু'পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড সংঘর্ষ বাধে পরে এ আক্রমণে শত্রপক্ষের ৩০ জন সৈন্য খতম হয়।

কুষ্টিয়ার উভয় পক্ষের মধ্যে মুখোমুখি এক সংঘর্ষ

 গত ২২শে সেপ্টেম্বর দুই কোম্পানি পাকফৌজ তেতুলবাড়ীয়া গ্রামের আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যানের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিলে মুক্তিবাহিনী তাদের ঘিরে ফেলেন। মুখোমুখি এক সংঘর্ষে হানাদার বাহিনীর ৩ জন