পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৭৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



729

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : একাদশ খণ্ড

দালাল হত্যা

 নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া সংবাদে জানা যায় কুমিল্লা জেলার চান্দিনা থানার অন্তর্গত জোর পুকুরিয়া গ্রামের ইয়াহিয়া বিশিষ্ট কুখ্যাত দালাল আব্দুর রহমানকে মুক্তিফৌজ গেরিলারা চলন্ত বাস হতে নামিয়ে প্রকাশ্যে হত্যা করতে সমর্থ হয়।

পাক অস্ত্রবাহী দুটি জাহাজ বাংলাদেশ নৌবাহিনী ডুবিয়ে দিয়েছে

 ঢাকা, ২০শে আক্টোবর- এখানে বিলম্বে প্রাপ্ত এক সংবাদে প্রকাশ, গত ৮ই আক্টোবর বাংলাদেশ নৌ বাহিনী চট্টগ্রামের নিকট পাক সেনার জন্যে অস্ত্রশস্ত্র বহনকারী দুটি বড় জাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছে। এই জাহাজের মধ্যে একটি পাকিস্তানী জাহাজ, নাম “নাসিম’। এতে দুটি ট্যাঙ্ক ও অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র ছিল। অপর জাহাজটি গ্রীসের নাম “এলভোস”। 

-সাপ্তাহিক বাংলাদেশ, ২৫ অক্টোবর, ১৯৭১

রণাঙ্গন থেকে লিখছি

 স্বাধীনতা রক্ষার অতন্দ্র প্রহরী দুঃসাহসী তরুণ মুক্তিযোদ্ধাগণের (মনোহরদ ও কাপাসিয়া থানার) চতুর্মখী আক্রমণে মনোহরদিস্থিত পাক বিবর ঘাঁটিটি গত ২১শে অক্টোবর সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং ঘটনাস্থলে ২১ জন হানাদার সৈন্য নিহত হয়। মনোহরদি ও কাপাসিয়ার মুক্তিযোদ্ধাগণ ঘটনাস্থল হইতে যথাক্রমে ২জন ও ৩ জন দস্যু সেনাকে বন্দী করেন এবং বহু অস্ত্র ও গোলাবারুদ হস্তগত করেন। বাকী পলায়নরত ইয়াহিয়া সেনাগণের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ বিভিন্ন খণ্ড যুদ্ধে ১১ জনকে হত্যা করেন ও ৬ জন জনাসাধারণের হাতে ধৃত হয়। এখন তাহারা মুক্তিবাহিনীর হাতে বন্দী রহিয়াছে।

 কাপাসিয়া থানায়ঃ- গোসিঙ্গাস্থিত শত্রুঘাঁটিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের আচমকা হামলায় ৭ জন পাক সেনা নিহত হয়। ১৯শে অক্টোবরের এই ঘটনার দিনেই শত্রুরা ছাউনী ছাড়িয়া দিতে বাধ্য হয়।

 রায়পুর থানাঃ -১৮ই অক্টোবর হাটুভাঙ্গাতে মুক্তিবাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণে ৩৫ জন পাক সেনা নিহত ও ৩৮ জন আহত হয়।

 কালীগঞ্জ, জয়দেবপুর, শ্রীপুর ও শিবপুরের তরুণ মুক্তিযোদ্ধাগণ শত্রর উপর প্রচণ্ড চাপ অব্যাহত রাখিয়াছেন। 

-মুক্ত বাংলা, ২৫ অক্টোবর, ১৯৭১
* * * * * * * * *

রণাঙ্গন সংবাদ

(মুক্তিফৌজ সূত্র)

 চিলমারী রণাঙ্গনে গত এক সপ্তাহের মধ্যে বর্বর পাক সেনারা মর্টারের সাহায্যে আমাদের মুক্তিবাহিনীর আগ্রবর্তী ঘাঁটিগুলির উপর গুলিবর্ষণ করে- কিন্তু আমাদের মুক্তিবাহিনীর জোয়ানরা সাহসের সঙ্গে অনুরূপগুলির দ্বারা উত্তরদান করে তাদের নিস্তব্ধ করে দেন। রউমারী দখলে অসমর্থ ও বিপর্যন্ত পাক সেনারা এখন চিলমারী থানার অধিকৃত অঞ্চলে তাদের অত্যাচার ও পোড়াও নীতিকে জোরদার করেছে।