পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্থ খণ্ড).pdf/২৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

261 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিল : চতুর্থ খন্ড সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন। এছাড়াও অনেকে বিভিন্ন দায়িত্ব নিয়ে স্বেচ্ছায় কাজে এগিয়ে আসেন। পচিশে মার্চের আগে পর্যন্ত অনেকবার মার্কিন সেনেটর, প্রেসিডেন্ট নিক্সন, উথান্ট এবং বৃহৎ শক্তিবর্গের সরকার ও আরও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে পত্র ও তার বার্তা পাঠানো হয়- বাংলাদেশের রক্তপাত বন্ধ করা ও জনগণের নির্বাচিত নেতাদের হাতে শাসনভার হস্তান্তর করার দাবী জানিয়ে। পচিশে মার্চের অপরিণামদর্শী ঘটনা আমাদেরকে সাময়িকভাবে স্তম্ভিত ও বিহবল করে। কিন্তু বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণার পরে পরেই পুরোদমে আমাদের প্রচারকার্য শুরু হয়। মাত্র এক ঘন্টার নোটিশে আমরা সকল সদস্য একটা জরুরী সভায় মিলিত হয়ে আমাদের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করি। দুর্গত মানবতার সেবায় ব্যয় করার জন্য মাথাপিছু কমপক্ষে একশত ডলার চাঁদা দেওয়ার প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে এ সভায় নেওয়া হয়। এ ছাড়া নিউইয়র্কে ব্যয় বহনের জন্য মাসিক চাঁদার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। প্রথম কিস্তিতে তিন হাজার ডলার তুলে নিউইয়র্কে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিশেষ উল্লেখযোগ্য এই যে অনেক ব্যাঙ্কে ধারের খাতার অংক বাড়িয়ে চাঁদা দিয়েছেন, অনেকে নির্ধারিত নিন্মমানের অনেক বেশী দিয়েছেন, এবং সকলেই যে-কোন মুহুর্তে বাংলাদেশের জন্য সাধ্যমত সাহায্য করার অঙ্গীকার করেছেন। ছাত্র হিসাবে টাকার অভাব থাকলেও, আমাদের কর্মপ্রেরণার অভাব নেই। কলেজষ্টেশান থেকে এ পর্যন্ত বহুমুখী প্রচারকার্য চালিয়েছি তার মধ্যে নিন্ম লিখিতগুলি উল্লেখযোগ্যঃ -পচিশে মার্চের পরে একশো সেনেটর, জাতিসংঘ প্রধান এবং বৃহৎশক্তির রাষ্ট্রপ্রধানগণের নিকট কয়েক দফা আবেদনপত্র ও তার বার্তা পাঠানো হয়। এখনও বিশেষ বিশেষ প্রয়োজনে তাঁদের নিকট পত্র ও তার বার্তা পাঠানো হচ্ছে। -বাংলাদেশে স্বাধীনতা সংগ্রামে ও দুর্গত মানবতার সাহায্যের দাবী জানিয়ে বিভিন্ন শহরের মার্কিন নাগরিকদের স্বাক্ষরসহ ১১ জন প্রভাবশালী সেনেটরের কাছে ১৫০০ আবেদন পত্র পাঠানো হয়েছে। -টেক্সাস এ এন্ড ইউনিভার্সিটিতে ছাত্র ও শিক্ষকদের মাঝে বাংলাদেশের সংগ্রামের সঠিক চিত্র তুলে ধরা হয়। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রত্যাগত অনেক শিক্ষক আমাদের বিশেষ সাহায্য করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্টের সাথে দল বেঁধে দেখা করে এখানকার বাংলাদেশের দুর্গত ছাত্রদের জন্য আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস পাওয়া গেছে। -পাকিস্তানে প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ইউজিন লক ও প্রাক্তন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান বিরোধীদলের নেতা হ্যারল্ড উইলসনের সাথে যথাক্রমে ডালাস ও অষ্টিনে দেখা করে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করি এবং বাংলাদেশকে সাহায্য করার আবদেন জানাই। -স্থানীয় বেতার, টিভি এবং দৈনিকে বাংলাদেশের উপর সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করেছি। এছাড়া হিউস্টনে বাংলাদেশ ছাত্র সংস্থার আয়োজনে ওখানকার টিভি ও বেতারে একই রকম আলোচনা সভায় যোগ দিয়েছি। -*RTETo fossin fost-TTE offiffTā "Conflict in East Pakistan : Background and Prospect" নামক নিরপেক্ষ রিপোর্ট খানির পাঁচশো কপি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে এবং বিশ্বব্যাপী প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। -এখানে ছাত্র-সেনেটে বাংলাদেশের গণ-আন্দোলন দমনে পাকিস্তান সরকারের মার্কিন অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহারকে নিন্দা করা হয়েছে।