পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্থ খণ্ড).pdf/৫০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

476 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিল : চতুর্থ খন্ড সংসদ সদস্যদের সমাবেশে অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার ৬ জুলাই, ১৯৭১ বাংলাদেশ পরিষদ সদস্যবর্গের সমাবেশে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ভাষণ স্বাধীন বাংলাদেশের মাননীয় পরিষদ সদস্যবর্গঃ আপনারা আমার সংগ্রামী অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পর আমরা সবাই একসঙ্গে মিলিত হবার সুযোগ পেয়েছি। আজ জাতির ক্রান্তি-লগ্নে আমাদের এই সম্মেলনের গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের মুক্তিফৌজের বীর নওজোয়ানেরা অপূর্ব বীরত্বের সাথে এখন শত্রর মোকাবেলা করছে। হাজার হাজার যুবক পবিত্র মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষার সংকল্পে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আত্মোৎসর্গের মহান আদর্শে তারা বলীয়ান। মাননীয় সদস্যবৃন্দ, আপনারা জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি। বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষ বিশ্বাস করে তাদের দায়িত্ব আপনাদের অর্পণ করেছিল। আপনারা সবাই বাঙালীর স্বাধীনতা যুদ্ধের সৈনিক বৈ আর কিছু নন। আমাদের মহান নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘদিনের সহচর হিসাবে তাঁর জীবনব্যাপী আদর্শ আর সংগ্রামের আমরা ধারক ও বাহক। আদর্শের জন্য, নীতির জন্য, নেতার কাছে আর বাংলার মানুষের কাছে দেওয়া প্রতিজ্ঞা রক্ষার জন্য এই ধরনের অটুট মনোবল আর কোন দেশের জনপ্রতিনিধিরা দেখাতে পেরেছেন কিনা তার নজীর আমার জানা নেই। আপনাদের বীরত্ব, আদর্শনিষ্ঠা, মনোবল ও ত্যাগের জন্য আমি অভিনন্দন জানাই। আপনারা গৃহহারা সর্বহারা হয়ে বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মোৎসর্গ করেছেন- তাই আপনাদের প্রতি আমার অকুণ্ঠ আন্তরিক সালাম আর অভিনন্দন। শপথবাণী উচ্চারণ করিয়েছিলেন। সেদিন সাক্ষী ছিল রেসকোর্স ময়দানের লক্ষ লক্ষ সংগ্রামী জনতা আর বাংলার নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষ। আমি আজ গর্বের সঙ্গে বলব, মহান নেতার হাত ধরে আমরা যে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে প্রতিজ্ঞায় আমরা অটুট এবং অটল রয়েছি। আপনাদের অসীম মনোবল বিগত কয়েক মাস যাবৎ স্বাধীনতা সংগ্রামকে জিইয়ে রেখেছে। অবশ্যি সঙ্গে সঙ্গে এই কথা বলতে হবে, আমাদের যে সমস্ত বীর সৈনিকেরা, মুক্তিফৌজের যে তরুণ সংগ্রামীরা মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছেন তাঁদের অপূর্ব বীরত্ব বাংলার মানুষের জন্য এক গর্বের বস্ত্ত। আর ভবিষ্যৎ ইতিহাসের জন্য তা এক অপূর্ব বীর গাঁথা। ৬-দফা ভিত্তিক শাসনতন্ত্র রচনার জন্য আপনারা জনগণের কাছে যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন তা পালন করতে আপনাদের নেতা এবং তার সহকর্মীবৃন্দ কী কী প্রচেষ্টা চালিয়েছেন, তা আপনাদের জানা আছে। জাতীয় পরিষদের সদস্যগণ জানেন, একটা খসড়া শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করে আপনাদের সামনে পেশ করা হয়েছিল। সেই খসড়া শাসনতন্ত্র পর্যালোচনা ও পরীক্ষার জন্য ৩০ সদস্য বিশিষ্ট সাব-কমিটি যখন আলাপআলোচনা চালাচ্ছিল, তখনই মার্চ মাসের সেই ১লা তারিখে হঠাৎ জনাব ইয়াহিয়া খান সাহেব ভুট্টো সাহেবের আজকে পাকিস্তান দ্বিধাবিভক্ত হওয়ার যদি কোন মূল আর সঙ্গত কারণ থাকে, তাহলে সে অবস্থা সৃষ্টি আমরা