পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্থ খণ্ড).pdf/৫৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

526 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিল : চতুর্থ খন্ড বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি নূরে | বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম ১৭ নভেম্বর, ১৯৭১ স্বাধীনতার অগ্নিমন্ত্ৰে শুচিশুদ্ধ অনির্বাণ মুক্তিবাহিনী, অকুতোভয় ছাত্র-শ্রমিক ও আমার সংগ্রামী অভিভাবকমন্ডলী। অবিস্মরণীয় প্রেরণায় অনুপ্রাণিত ও তাঁর অমোঘ নিদের্শ পরিচালিত স্বাধীনতা সংগ্রামের ৭ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। এই সংগ্রামের প্রারম্ভে বাংলার নৃশংস আক্রমণের মুখে এক দুর্ভেদ্য প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। হত্যা, ব্যাভিচার, নৃশংসতা ও পাশবিকতারকাছে বাংলার গণদেবতা মাথা নত করে নাই, আর তাই, আমাদের আন্দোলন ক্রমে ক্রমে প্রতিরোধের মোহনা হতে প্রতিঘাতের প্রচন্ড উন্মত্ততায় মোড় নেয়। বাংলার প্রতিটি তরুণ বঙ্গবন্ধুর মহান আদর্শকে সামনে রেখে মায়ের কোল ছেড়ে বেরিয়ে আসে বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। তারা সামরিক শিক্ষা নিতে থাকে শত্রর বিষদাঁতগুলো উপড়ে ফেলা আর জননী বাংলাকে মুক্ত করার দৃপাত মানসে। তাই আজ আমরা দেখতে পাই, ২৪ ঘন্টায় বাংলাকে পর্যুদস্ত করার দুঃস্বপ্ন তাদের ভেঙ্গে চৌচির হয়ে গেছে, আমারা দেখতে পাই সূর্যসেনাদের তীক্ষ্ম আঘাতের বিপর্যস্ত পশ্চিমা পশুদের শায়িত লাশের স্তুপ। ঐক্যবদ্ধ বাঙ্গালীর সংগ্রামের ফলে শুধু পশ্চিমা ষড়যন্ত্রের প্রাসাদ প্রকম্পিত হয়ে ওঠে নাই, সারাবিশ্ব বুঝতে পেরেছে যে, বাঙালী নিঃস্ব নয়। বাঙালীরা পরাধীনতা মানে না। আজ সারা বাংলার একটি পথ- সে পথ মুক্তির, সে পথ স্বাধীনতার। তাই মৃত্যুর দ্রুকুটি নির্যাতনের খড়গাঘাত আমাদেরকে বিপর্যস্ত করতে পরেনি; বরং শত্রর পাশবিকতা শক্র হননের প্রতিহিংসায় আমাদের প্রজ্জ্বলিত করেছে। বাংলার মাটি আজ অপরাজেয়, বাঙালীর প্রতিটি ঘর দুর্ভেদ্য দুর্গ। সমঝোতার প্রলোভন তাদের কাছে প্রহসন ছাড়া কিছুই নয়। আন্দোলনের অনির্বাণ আদর্শ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, আর আন্দোলনের সম্পূর্ণ পরিচালনার দায়িত্ব আওয়ামী লীগের। বাংলার সংগ্রামী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গণম্যান্ডেন্টকে উপেক্ষা করার ঔদ্ধত্যের চ্যালেঞ্জ করে যখন স্বাধীনতার উদাত্ত আহবান ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ জানায়, তখন তারা বঙ্গবন্ধুকে মহান জাতির নেতা হিসাবে সামনে রেখেই এ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল এবং দালাল ছাড়া বাংলার প্রতিটি মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে এ আন্দোলনের পাশে সে দাঁড়িয়েছিল দলমত নির্বিশেষে। আজ স্বাধীনতা আন্দোলনের ৭ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। বাংলাদেশের মাটিতে মুখচেনা দালাল, ডাষ্টবিনের আবর্জনাকে তুলে এনে বিশ্বকে যখন বিভ্রান্ত করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে, তখন বাংলার প্রতিটি প্রগতিশীল মহলের সম্মিলিত পতাকার নিচে দাঁড়িয়ে এ দূরুভিসন্ধির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা উচিত। বিশ্বের মানুষ জানে বাংলার প্রগতিশীল রাজনৈতিক মহল দ্বিধাহীনচিত্তে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আস্থা প্রকাশ করে এবং গণপ্রজাতান্ত্রিক বাংলাদেশ সরকারকে সমর্থন জানিয়ে অকুতোভয় সে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করেছেন। এছাড়া আমি গর্বিত এবং আনন্দিত বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন আমাদের সাথে এক যুক্ত বিবৃতির মাধ্যমে বাঙ্গালী জাতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে, অনুপ্রেরণায় ও নির্দেশে পরিচালিত স্বাধীনতা সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ মুক্তি আন্দোলনের আহবান জানিয়েছে। তারা সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসন গড়ে তোলার দ্বিধাহীন ডাক দিয়ে বিশ্বকে পুর্নবার জানিয়ে দিলেন সমস্ত প্ররোচনায় মুখে বাঙালী জাতি এক ও অভিন্ন। স্বাধীনতার প্রশ্নে তারা হিমাচলের মত অটল। ... আসুন, আমরা রাত্রির বৃন্ত হতে ছিড়ে আনি ফুটন্ত সকাল। সংগ্রামী ভাইয়েরা, দখলকৃত বাংলায় সম্প্রতি উপ-নির্বাচনের নামে বিশ্বের প্রচন্ডতম হাস্যকর প্রহসন সৃষ্টি করা হয়েছে। ২৪ বছরের ইতিহাসে যাদের কুষ্ঠরোগীর মত দালালীর ক্ষতচিহ্নে ভরা, গত নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ গণচেতনার ভয়ে যারা রণভঙ্গ দিয়ে বিবি সাহেবের আর্চলের তলায় আশ্রয় নিয়েছিলো, এমন কি বিশ্বাসঘাতক সবুর ও নির্লজ্জ ফ-কা চৌধুরীর মত যারা তওবা করে ক্ষমা ভিক্ষা করে বিবৃতি দিয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আস্থা