পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্থ খণ্ড).pdf/৫৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

532 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিল : চতুর্থ খন্ড (চ) বাংলাদেশের জলসম্পদের যথাযথ উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও বিদেশী রপ্তানির উদ্দেশ্যে বনজসম্পদ, বন্যপশু-পক্ষী-কীট-পতঙ্গদের সংরক্ষণ ও বৃদ্ধি সাধন করা হবে এবং মৎসশিল্পে বৈজ্ঞানিক প্রথা প্রবর্তনসহ উহার সার্বিক উন্নতি সাধন করা হবে। (ছ) কৃষিশ্রমিক বা ক্ষেতমজুরদের জন্যে উপযুক্ত মজুরি পাবার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। (জ) জাতীয় শত্রুজোতদার-মহাজনদের নিকট যে সমস্ত কৃষক-মজুর ও গরীব কুটিরশিল্প যুগ যুগ ধরে ঋণদায়গ্রস্থ, তাদেরকে ঐ ঋণের নাগপাশ থেকে মুক্ত করা হবে। (ঝ) কৃষকদের জন্যে এবং কুটিরশিল্পীদের জন্যে বিনাসুদের দীর্ঘমেয়াদী ঋণ পাবার ব্যবস্থা করা হবে এবং তাহদের উৎপাদিত দ্রব্যাদির উচিত মূল্য পাবার ব্যবস্থা করা হবে। কৃষকদের মত কুটিরশিল্পীদেরও (ঞ) কৃষক ও কৃটিরশিল্পীদের স্বার্থে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত সমবায় গঠনের জন্যে উৎসাহ ও সহযোগিতা প্রদান করা হবে। পর্যায়ক্রমে কৃষি সমবায়, পণ্য সরবরাহ ও বাজারজাতকরণ সমবায় প্রতিষ্ঠা এবং উন্নয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। (ট) জনসাধারণকে যৌথ অর্থনৈতিক জীবনযাত্রায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় কিছু সংখ্যক আদর্শ যৌথ খামারের প্রবর্তন করা হবে। ২। শ্রমিক ও শ্রম সমস্যার ক্ষেত্রে (ক) শ্রমিকদের জন্য মানুষের মত বেঁচে থাকার উপযোগী মজুরি প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। (খ) দৈনিক অনাধিক ৮ ঘন্টা শ্রমের রেওয়াজ প্রতিটি শিল্প-ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক ও দোকান কর্মচারীদের ক্ষেত্রে কড়াকড়িভাবে চালু করা হবে। অবশ্য প্রয়োজনে ৮ ঘন্টার অধিক শ্রমের জন্য দ্বিগুণ হারে (গ) অবসরপ্রাপ্ত বা কাজ করতে গিয়ে পঙ্গু বা কার্যে অক্ষম হয়ে গেছে এমন শ্রমিকদের জন্য সরকার ও মালিকদের খরচে বিশেষ মজুরি (গ্রাচুইটি), বীমা ও পেনশনের ব্যবস্থা করা হবে। (ঘ) শ্রমিকদের জন্যে প্রয়োজনীয় বাসস্থান এবং অবসর বিনোদন কেন্দ্রেন ব্যবস্থা রাখা হবে। (ঙ) শ্রমিকদের জীবনধারণের মান ও চাকরির শর্ত উন্নত করার প্রয়োজনে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন, মালিকদের সাথে যৌথ দরকষাকষি ও ধর্মঘট করার পূর্ণ অধিকার দেওয়া হবে। ৩। শিল্প ও ব্যবসার ক্ষেত্রে (ক) কৃষিনির্ভর অবস্থা থেকে দেশকে দ্রুত শিল্পসমৃদ্ধ করে গড়ে তোলা হবে এবং এ নীতির উপর ভিত্তি করে শিল্পব্যবস্থাকে পুনর্গঠন করা হবে। (খ) রেল, ষ্টিমার ও ষ্টেটবাস ব্যাঙ্ক, বীমা, পোর্ট, ডক এবং কাগজ, পাট, বিদ্যুৎ, তৈল, খনি, জাহাজ নির্মাণ কারখানা, অস্ত্র কারখানা ও বিআইডিসি, ওয়াপদা ও বিসিক কর্তৃক নির্মিত কারখানা ইত্যাদি মূল শিল্প ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানসমূহ পরিপূর্ণভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত থাকবে। (গ) দেশকে দ্রুত আত্মনির্ভরশীল ও শিল্প-সমৃদ্ধ করার নীতিকে ছোট ও মাঝারি শিল্প এবং শিল্পপতিদের সরকারী সহযোগিতা দেওয়া হবে। অল্প সুদে ঋণ প্রদান ও যুক্তিসঙ্গত দামে কাঁচামাল ইত্যাদি সরবরাহের ব্যবস্থা ও বাজারের সুযোগ-সুবিধা লাভে তাদের সাহায্য করা হবে।