পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্থ খণ্ড).pdf/৫৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

534 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিল : চতুর্থ খন্ড ৬। বিচার ব্যবস্থা ও আইন সম্বন্ধীয় ক্ষেত্রে (ক) জনসাধারণের স্বার্থের জন্যে আইন, আইনের জন্য জনসাধারণ নহে- ঐ নীতির ভিত্তিতেই আইন ব্যবস্থার পরিবর্তন করা হবে। বিচার যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, তার জন্যে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিচার বিভাগকে শাসন বিভাগ হতে পৃথক করা হবে। (খ) বিনাবিচারে কাহাকেও শাস্তি দেওয়া বা হয়রানি করা হবে না। যে কোন আদলতের রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারেনি এমন ব্যক্তির উচ্চতর আদালতে আপীল করার অধিকার থাকবে। অভাবগ্রস্তদের জন্য বিনা খরচে আইনগত সাহায্য ও পরামর্শ লাভের ব্যবস্থা থাকবে । (গ) ছোটখাটো ও প্রাথমিক বিরোধের যাতে শুরুতেই অবসান হয় তার জন্য গণআদালতের ব্যবস্থা থাকবে। (ঘ) বিচর ব্যবস্থায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতির প্রচলন করা হবে। প্রতিটি বিচারক জনসাধারণ কর্তৃক যথাযথভাবে নির্বাচিত হবেন। প্রয়োজনবোধে নির্বাচকমন্ডলীর সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ বিচারককে প্রত্যাহার এবং তদস্থলে নতুন বিচারক নির্বাচিত করতে পারবেন। (ঙ) অন্যায় অবিচার বা অসাদচরণের দায়েং কোন বিচারককে উচ্চতর আদালতে অভিযুক্ত করা যাবে। ৭। ধর্ম ও সংস্কৃতি সম্পর্কে (ক) রাষ্ট্র পরিপূর্ণভাবে ধর্মনিরপেক্ষ থাকবে। যার যার ধর্ম তার কাছে পবিত্র এবং ধর্মের ব্যাপারে কোনরূপ জবরদস্তি নেই- ধর্ম প্রসঙ্গে এ নীতি কড়াকড়িভাবে কার্যকরী হবে। ধর্মের ব্যাপারে কোন বৈষম্যমূলক আচরণ যাতে না ঘটতে পারে তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা রাখা হবে; অর্থাৎ প্রত্যেক ধর্মের অনুসারীরা নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করার সুযোগ পাবে। রাষ্ট্রে প্রত্যেক ধর্মের স্বীকৃতি ও ধর্ম পালকদের অবাধ অধিকার থাকবে- কিন্তু ধর্মের নামে কোন প্রকার জোর-জুলুম করা বা শোষণ চলতে দেওয়া হবে না। (খ) বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সংস্কৃতি বা তমদ্দুনের ভিত্তি হবে 1) বাঙ্গালী জাতির সংস্কৃতির বিকাশ ও তার উন্নয়ন সাধন করা: 2) সংস্কৃতি ও সাহিত্যে মেহনতি জনগণের আশা-আকাঙ্খাকে রূপায়িত করা: 3) গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রের মূলনীতি বা আদর্শেও বিরোধী যাবতীয় সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রকাশ, প্রচার ও প্রসার রোধ করা: 4) কুরুচিপূর্ণ যাবতীয় গান, বাজনা, সিনেমা, থিয়েটার, শিল্পকলা ইত্যাদি তথাকথিত শিল্পসাহিত্য ও সংস্কৃতির উপর কঠোর বাধানিষেধ আরোপ করা: 5) জনগণের সর্বস্তরে সুন্দর, সুষ্ঠ স্বাভাবিক মননশীলতা ও মানসিকতা যাতে গড়ে ওঠে তার জন্য এবং শিল্প-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সৃজনশীল প্রতিভার বিকাশের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ৮৷ খাজনা ট্যাক্স ও করের ক্ষেত্রে (ক) সকল প্রকারের ইজারাদারীসহ প্রচলিত খাজনা প্রথার বিলোপ সাধন করা হবে। সমস্ত বকেয়া খাজনা মওকুফ করা হবে। খাজনা প্রথার স্থলে উৎপাদন অণুসারে কর আদায়ের প্রথা প্রবর্তন করা হবে। নিম্ন আয়ের কৃষক ও গরীব কুটির শিল্পীদের জন্য - যাদের ভরন পোষণের পর উদৃত্ত থাকে না- তাদেরকে রেহায় দেওয়া হবে।