পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্থ খণ্ড).pdf/৫৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

535 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিল : চতুর্থ খন্ড খ. শিল্প-কৃষি ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ক্রমিক উচ্চ হারের কর ব্যবস্থ্য প্রবর্তন করা হবে, অর্থাৎ উচ্চ আয়ের জন্য উচ্চতর হার এবং নিম্ন আয়ের নিম্নতর হারে কর আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে এবং পরোক্ষ ট্রাক্স প্রথার বিলোপ করা হবে। ৯। নারী সমমাজের ক্ষেত্রেঃ ক. নারীরা যে সমস্ত সামাজিক অব্যবস্থা বা দুনীতির দূরূন যুগ যুগ ধরে লাঞ্চিত ও নিগৃহীত হয়ে আসেছে সেগুলোর অসান ঘটানোর হবে। সমম্পত্তির উত্তরাধিকতার, বিবাহ বিচ্ছেদ আইন, বৃত্তিগ্রহণ ও চাকুরীতে প্রবেশ প্রভৃতি বিষয়ে নারীরা পুরুষদের সমান অধিকার ভোগ করবে। খ. নর ওনারীর সমান অধিকার থাকবে। স্ত্রী-পুরুষনির্বিশেষে সমান কাজের জন্য সমান মজুরির ব্যবস্থা রাখা হবে। গভাবস্থায় সংকটকালীন সময়ে মেহনতকারী নারীকে সর্বোত্তম প্রয়োজনীয় ছুটি ও বিশেষ চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হবে। ১০। উপজাতি ও তপসিলীদের ক্ষেত্রে ক) বাংলাদেশের যে সমস্ত অণুন্নত উপজাতি আছে তাদের মাতৃভাষা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনের উন্নয়ন করা হবে। খ) চাকরি এবং অন্যান্য সামাজিক ও শিক্ষাগত সুযোগরে ক্ষেত্রে উপজাতি, তফসিলী ও অন্যান্য পশ্চাৎপদ সম্প্রদায়ের ব্যাপারে বিশেষ সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে। ১১। রাষ্ট্র কাঠামো ও সরকারী প্রশাসনের ক্ষেত্রে ক) বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের আইনসভা হবে এককক্ষবিশিষ্ট। ঐ আইনসভা হবে- জনগণের দ্বারা নির্বাচিত, জনগণের স্বার্থের রক্ষক ও জনগণের মধ্য থেকে আসা-গণপ্রতিনিধিদের সর্বোচ্চ সংস্থা। খ) বিপ্লবের তিন শত্রু বা তাদের সাহায্যকারী দালালদের কোনরূপ নাগরিক অধিকার বা ভোটাধিকার একটি নিদিষ্ট সময় পর্যন্ত থাকবে না। ঐ নির্দিষ্ট সময়ে সরকারী শাসন বা প্রশাসন ব্যবস্থায় তাদেরকে কোনরূপ অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না। কিন্তু তারা যাতে তাদেও প্রতিক্রিয়াশীল ধ্যান-ধারণার পরিবর্তন করে নতুন সমাজের নতুন মানুষ হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তুলতে পারে- তার জন্য রাষ্ট্র উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। গ. গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জেল ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করে অপরাধীদের নৈতিক ও চারিত্রিক উন্নতি সাধন করে তাদের পূনর্বাসন করবে। ঘ, পার্লামেন্ট, আইনসভা বা স্থানীয় শাসন বা প্রশাসন সংস্থাগুলোর নির্বাচনে জনসাধারণের মধ্যে যাঁরা ঠার বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের এবং মানসিক সুস্থ অবস্থায় আছেনতনারী-পুরুষ নির্বিশেষে তাদের সকলেরই সার্বজনীন, সমান ও প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার থাকবে। সংশ্লিষ্ট নির্বাচকমন্ডলীর সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ প্রয়োজনবোধ তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি বা প্রতিনিধিদের প্রত্যাহার (Recall) করতে এবং নতুন প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারবে। গোপন ব্যালট প্রাথাতে ভোটদান ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হবে। (ঙ) দেশে ব্যাপক গণপঞ্চায়েত ব্যবস্থার প্রচলন করা হবে। স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থায় গনপঞ্চায়েতের প্রাধান্য থাকবে। (চ) সর্বনিম্ন প্রশাসক থেকে রাষ্ট্রপ্রধান পর্যন্ত সকল সরকানী প্রশাসক ও পরিচালক জনসাধারণের গোপন, সমান ও প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবে। প্রধানত: স্থানীয় জনসাধারন থেকেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসক বা পরিচালক নির্বাচিত করা হবে। নির্বাচকমন্ডলীর সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ প্রয়োজনবোধে উপরোক্ত যেকোন প্রশাসক বা পরিচালককে প্রত্যাহার করে সতুন প্রশাসক বা পরিচালক নির্বাচিত করতে পারবে।