পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্থ খণ্ড).pdf/৬১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

581 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিল : চতুর্থ খন্ড ঢাকাস্থ শ্রীরথীন্দ্র সরকার এবং শ্রীঅলোক বলকে রাজাকার এবং পাক সৈন্যেরা ধরে নিয়ে অকথ্য শারীরিক অত্যাচার চালায়। এ খবর পেয়ে তাদের সমূহ মৃত্যুর হাত থেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হই। সাহেবের (ডাইরেক্টর, পোষ্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিসিন) আন্তরিক প্রচেষ্টায় সুস্থ হয়ে ওঠে। আমাদের পরিক্রমণকালে আমি প্রত্যেক জায়গায় আশ্রয় প্রার্থীদের আশ্রয়দান এবং মুক্তিবাহিনীর কাজে যথাসাধ্য সাহায্য করতে আবালবৃদ্ধবণিতা বিশেষ করে যুব সমাজকে পরামর্শ দিয়েছি। এমন কোন বৌদ্ধ গ্রাম নেই যেখানে মুক্তিবাহিনী এবং হিন্দু পরিবার আশ্রয় গ্রহণ করেনি, এমন কি জনৈক অফিসারসহ পাঁচজন মুক্তিবাহিনী ঢাকা বৌদ্ধ মন্দিরে আশ্রয় নিয়ে তাদের কাজ চালিয়ে গিয়েছিলো। বিগত ন’মাসে আশ্রয় প্রার্থী অনেক ছেলেমেয়ে এবং মাতৃপিতৃহীন শিশু অগ্রসার বৌদ্ধ অনাথালয়ে ভিক্ষু সুগতানন্দের তত্ত্বাবধানে আছে। পয়লা মে তারিখে ঢাকা বৌদ্ধ মন্দির লুট হলে তদন্তের পর কর্তৃপক্ষ আমাকে আট-দশ জনের নাম দাখিল করতে বলে। আমি অসম্মতি জানালে তারা গ্রাম ঘেরাও করে জুলিয়ে দেবে বললো। আমি বলেছি, আমার Case-এর তদন্তের প্রয়োজন নেই। তদন্তের নামে অনর্থক কতকগুলো নিরীহ লোকের উপর অত্যাচার হোক, এ আমি কোনদিন চাইনে। এভাবে কমলাপুরের ঠাকুরপাড়া, সবুজবাগ, আহমদবাগ প্রভৃতি আমার প্রতিবেশী গ্রামের উপর পাক-সৈন্যের হামলা সব সময় প্রতিরোধ করেছি। পরিভ্রমণকালীন ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দিরে যে সমস্ত মূর্তি ভগ্ন কিম্বা অক্ষত অবস্থায় দেখতে পাই তা যথাস্থানে রক্ষিত আছে। আমার সংঘ বৌদ্ধগ্রাম ও মন্দিরের ক্ষয়ক্ষতির একটা মোটামুটি ফর্দ তৈরী করে তা সামরিক এরি মধ্যে আন্তঃ পরিভ্রমণ বন্ধ করে বিদেশে যাবার জন্যে বারবার আমার কছে চাপ পড়তে লাগলো। আমি জানিয়েছি, স্বচক্ষে দেখা এত অত্যাচারকে ধামাচাপা দিয়ে বিদেশে গিয়ে আমার পক্ষে মিথ্যা বলা কি করে সম্ভব? কিন্তু তারা সে কথায় কর্ণপাত না করে ক্রমাগত পীড়াপীড়ি শুরু করলো। শরণ নিলাম পোষ্ট গ্রাজুয়েট মেডিসিন ইন্সটিটিউটের ডাইরেক্টর প্রফেসর নুরল ইসলাম সাহেবের। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সাড়ে তিন মাস ডাক্তার সাহেবের চিকিৎসাধীনে থাকতে বাধ্য হলাম। হাসপাতালে থাকা অবস্থায়ও পাঁচ-ছ’বারের মতো কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থিত হতে আমাকে বাধ্য করেছিলো এবং বিদেশে যাবার জন্যে নানাভাবে ভীতি প্রদর্শন করছিলো। আমি শারীরিক অনুপযুক্ততার কারণ দেখিয়ে বিদেশে শত মিথ্যা বলা থেকে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সূর্যের উন্মেষের অন্তরায় না হয়ে বাঁচলাম। আমাকে বিদেশে পাঠিয়ে পাক-সরকার যে কাজ সমাধা করতে ব্যর্থ হলো মেজর রাজা ত্রিদিব রায়কে দিয়ে তা করিয়ে নিলো। আমার কাঁধ থেকে বোঝাটা নামাতে স্বস্থির নিঃস্বাস ফেলে আমি হাসপাতাল থেকে বের হয়ে আসলাম। সামরিক কর্তৃপক্ষ জোর করে আমার কাছ থেকে দু’টো বিবৃতি নিয়ে প্রচার করে। নমাসে আমার নামেও মোট তিনখানা বিবৃতি ছাপায়। কিন্তু আরেকখানা আমার খুলনা পরিভ্রমণকালীন আমার এবং আমার সংঘের সম্পূর্ণ অজ্ঞাতে ছাপানো হয়। তখন এগুলোর প্রতিবাদ করেও কোন ফল হয়নি। অধিকন্তু সামরিক জান্তা আমার উপর অধিকতর অসন্তুষ্ট ও ক্রুব্ধ হয়। এ ছাড়া দেশে থেকেও সামরিক জান্তার অত্যাচারের কথা বিশ্বের কাছে প্রচার করার সুযোগ পেয়েছিলাম। Kyoto, Japan-এ বিশ্বধর্ম ও বিশ্বশান্তি সম্মেলনে উপস্থিত থাকাকালীন The World Conference of Religion for Peace-off GTGFBF Gossos Dr. Homer a. Jack-& Too! আমার আন্তরিকতা জন্মে। মানবতার সেবায় আমি নিয়োজিত এ খবর পেয়ে আমার সাথে দেখা করতে তিনি tourist হিসাবে একদিনের