পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্থ খণ্ড).pdf/৬১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

589 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিল : চতুর্থ খন্ড বাংলাদেশ নিম্নপদস্থ পুলিশ কর্মচারী বাংলাদেশ পুলিশ কর্মচারী a. * * * * সহায়ক সংস্থার একটি আবেদন সহায়ক সংস্থার Տի, Գ Տ বাংলাদেশ নিম্নপদস্থ পুলিশ কর্মচারী সহায়ক সংস্থা স্বাধীন বাংলাদেশের নিম্নপদস্থ পুলিশ কর্মচারী ভায়েরা আমর উনিশ শ’সাতচল্লিশ সালের চৌদ্দই আগষ্ট ইংরেজ শাসকদের কবল থেকে স্বাধীনতা লাভের পর আমরা যে মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিলাম, বিগত চবিবশ বছর ধরে বাংলাদেশের সাতে সাত কোটি মানুষ পশ্চিম পাকিস্তানের কবলে পড়ে আমাদের সে আশা-আকাংক্ষা চিরতরে পর্যুদস্ত হতে চলেছিলো। সোনার বাংলাকে শোষণের কলোনী করে পাক শাসকচক্র আমাদের দাসত্বে পরিণত করার হীন ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিয়েছিলোকতিপয় পদলেহনকারী বাঙ্গালী দালালদের সহযোগিতায়। আমরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাং আর সামাজিক দিক দিয়ে হয়েছিলাম পংশু আর অসহায়। ওদের শসন-শোষণ আর অত্যাচারের ষ্টীম রোলারের আঘাতে বাংলার নিরীহ সরল মানুষ হয়েছে ক্ষিপ্ত- অশান্ত। তারই মৃত্যু প্রকাশ ঘটে উনিশ শ বায়ান্ন সালের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে- যে আন্দোলনের প্রবাহে বাংলার সোনা-মাণিক-ভাইদের বুকের তাজা রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল বাংলার পীচঢালা রাজপথ। শহীদ সালাম বরকত রফিকের লাল তাজা রক্তের বদলা শপথ নিয়েছিলো বাংলার সাতে সাত কোটি মানুষ। তারা বিনা দ্বিধায় বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মরণজয়ী সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো পাক জংগীশাহীর বিরুদ্ধে-একাত্মতা প্রকাশ করেছিলো দেশের মুক্তির সংগ্রামে। গত পচিশে মার্চের রাত থেকে পাক জংগীশাহী বাংলার নিরীহ নিরস্ত্র জনসাধারণের উপর যেরূপ নজির নেই। বাংলার নিরীহ মানুষ আজ ক্ষিপ্ত, অশান্ত। তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উদ্বুদ্ধ মুক্তিসৈনিক পাক জংগীশাহীর বিরুদ্ধে সংগ্রামরত। দশ লক্ষাধিক নরনারীর রক্তে রঞ্জিত বাংলার পদ্মা-মেঘনা-যমুনার অথৈ জলরাশি-পথেঘাটে আজ মানুষের হাহাকার। বর্বর পাক সৈন্যদের নরহত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, নারীধর্ষণের করুণ কাহিনীতে পৃথিবীর মানুষ আজ স্তব্ধ, হতবাক-বিশ্ববিবেক স্তম্ভিত, নির্বাক। তবুও বাংলার মানুষ আজ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ-ইস্পাতকঠিন চেতনায় আজ সংগ্রামমূখর। পৃথিবীর ইতিহাসে স্বাধীনতা আন্দোলন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, যে দেশেই বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে- সে দেশের সশস্ত্র বাহিনী হয় সরকারের পক্ষ সমর্থন করেছে, না হয় নীরবতার ভূমিকাই পালন করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে আমাদের (বাঙ্গালী) ইষ্ট পাকিস্তানী রেজিমেন্ট, ইষ্ট বিরোধী ভূমিকা সমর্থন করেছে- তার কোন নজির নেই। এ ধরনের বিপ্লব অনন্য-একক। এর একমাত্র কারণ, পাক জংগীশাহীর শোষণ আর অত্যাচার; অপর দিকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি তাদের অকুণ্ঠ সমর্থন। আমরা সশস্ত্র বাহিনী বিশেষ করে তথাকথিত পূর্ব পাকিস্তানের পুলিশ কর্মচারীরা ইংরেজ আমলের আইনের মাধ্যমে চবিবশ ঘন্টার জন্যে কাজ-কর্মে নিয়োজিত থেকেও আমরা ছিলাম সমাজের এক শ্রেণীর ঘৃণিত অস্পৃশ্য বীজ- পাক শাসকচক্রের ক্রীড়নক সমাজের এক শ্রেণরি অবহেলিত পদদলিত সরকারী কর্মচারী। আমরা কোনদিন মানুষের আস্থাভাজন হতে পারিনি- অথচ গাধার খাটুনি খেটেও আমরা ছিলাম অস্পৃশ্য অবহেলিত। আমরা চবিবশ ঘন্টা বিরামহীন পরিশ্রম করেও সমাজের কাছে হয়েছি লাঞ্ছিতঅবহেলিত। আমাদের দৈনন্দিন