পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/১০০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

973 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ৪০৮। বঙ্গোপসাগরে সপ্তম নৌ-বহর পৌঁছেছে, কুড়িটি আনন্দবাজার পত্রিকা ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ রুশ রণতরীও আসছে বঙ্গোপসাগরে সপ্তম নৌবহর পৌঁছেছে কুড়িটি রুশ রণতরীও আসছে মার্কিন সপ্তম নৌবহর বুধবারই বঙ্গোপসাগরে এসে হাজির হয়েছে। এই বহরে আছে পরমাণু শক্তিচালিত বিমানবাহী জাহাজ ‘এন্টারপ্রাইজ’। সঙ্গে এসেছে আরও সাতটি রণতরী। এদিন সিঙ্গাপুর থেকে পাঠানো ইউপি আইয়ের এই খবরের পাশাপাশি টোকিও থেকে এপি জানিয়েছে, কুড়িটি সোভিয়েট রণতরীও ভার মহাসাগরে এসে জড়ো হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারে এমন জাহাজও এর ভেতর আছে। জাপানী প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্ররা বলেছেন, গত ৯ ডিসেম্বর জাপানের দক্ষিণতম প্রান্ত ও কোরিয়া উপদ্বীপের মধ্যবর্তী সুসীমা প্রণালীর ভিতর দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্রবাহী একটি সোভিয়েট ফ্রিগেট এবং ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারে এমন একটি সোভিয়েট ডুবোজাহাজও বঙ্গোপসাগরের দিকে পাড়ি দিয়েছে। বুধবার রাতেই নয়াদিল্লীতে কর্তৃপক্ষ মহল বলেছেন, খবর পেয়েছি-মার্কিন সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে ঢুকেছে। বাংলাদেশ থেকে দখলদার পশ্চিম পাকিস্তানী বাহিনীকে সরিয়ে নেওয়ার কোন রকম এক্তিয়ারই এই নৌবহরের নেই। সপ্তম নৌবহর বা বাইরের যে কোন শক্তিই হোক-পশ্চিম পাকিস্তানী বাহিনীর উপর এখন কারও কোন রকম এক্তিয়ার নেই। কারণ, পশ্চিম পাকবাহিনীর সঙ্গে এখন ভারতীয় ও মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধ হচ্ছে। প্রণালীর পশ্চিম দিয়ে এগিয়ে গিয়েছে। জাহাজগুলো কোথায়, কোনদিকে যাবে এবং কেনই বা এসেছে তা এখনো যানা যায়নি। আমেরিকায় ভারতীয় রাষ্ট্রদূত মার্কিন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত সুস্পষ্ট কোন ব্যাখ্যান পাননি। গোড়ায় বলা হচ্ছিল, মার্কিন নাগরিকদের উদ্ধার করতেই মার্কিন নৌবহর আসছে। কিন্তু বিগত ৩৬ ঘণ্টা ধরে বলা হচ্ছে, ‘রক্তপাতের সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় পাকবাহিনী ও বিহারী মুসলমানদের অপসারণের জন্যই ওই নৌবহর এসেছে। আমেরিকায় ভারতের রাষ্ট্রদূত শ্রী এল কে বা গত মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের বৈঠকে বলেছেন, পাক সৈন্য ও অসামরিক লোকজন সরিয়ে নিতে বঙ্গোপসাগরের ওই বোম্বেটে মার্কিন নৌবহর যদি ংলাদেশে জাহাজ ভেড়াতে চায়-তাহলে এই একতরফা ব্যবস্থার দরুন পরিস্থিতি দুরূহ হয়ে উঠবে এবং সমগ্র ব্যাপারটি অনেক বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। শ্ৰী ঝা আরও বলেছেন, পশ্চিম খন্ডে পাক সৈন্যের সং র জন্য ংলাদেশ থেকে যদি পাক সৈন্য সরিয়ে নেওয়া হয়-তাহলে এই কাজকে আমরা শত্রতা বলেই গণ্য করব। সপ্তম নৌবহরের অধিনায়ক অ্যাডমিরাল জরজ ম্যাকেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট মাকসকে বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তানকে এই নৌবিহরের তৎপরতার আওতায় আনার উদ্দেশ্যে তাঁর বহরের কর্মক্ষেত্র ভারতের পশ্চিম দরিয়া অবধি প্রসারিত করা হয়েছে। এ এফ পি এই খবর দিয়ে জানাচ্ছেন, গত সোমবার ম্যানিলায় মার্কিন- ফিলিপিনো যৌথ প্রতিরক্ষা পর্যদের বৈঠকে অ্যাডমিরাল ম্যাকেন প্রেসিডেন্ট মারকসকে একথা জানিয়েছেন। মার্কিন সপ্তম নৌবহরের জাহাজগুলি দুই ভাগে ভাগ হয়ে সোমবার ও মঙ্গলবার গোপনে সিঙ্গাপুর অতিক্রম করে।