পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৭৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

730 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড Sbrミ এখনই ভারতের স্বীকৃতি বাংলাদেশের আনন্দবাজার পত্রিকা ৮ মে, ১৯৭১ স্বার্থের অনূকুল হবে না এখনই ভারতের স্বীকৃতি বাংলাদেশের স্বার্থের অনুকুল হবে না তবে মুক্তি আন্দোলনকে পূর্ণ সমর্থন দেওয়া হবেশ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী বিশেষ সংবাদদাতা নয়াদিল্লী, ৭ মে- আজ সকালে বিরোধী নেতাদের সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী বৈঠকে বসেছিলেন। প্রায় সকলেই বাংলাদেশ সরকারকে অবিলম্বে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান। (ব্যতিক্রমঃ বিকানীরের মহারাজা ডঃ করণি সিং এবং মুসলিম লীগ নেতা মহম্মদ ইসমাইল। দুজনের বক্তব্যে অবশ্য কিছু পার্থক্য ছিল।) সকলের কথা শোনার পর প্রধানমন্ত্রী যা বলেন তা মর্ম এইরকমঃ বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলনের প্রতিভারত পূর্ণ সমর্থন জানাবে, কিন্তু বাংলাদেশকে এখনই কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেওয়া এই দেশেরই স্বার্থের পরিপন্থী হবে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি প্রচুর সহানুভূতি থাকলেও স্বীকৃতির ব্যাপারে ভাবনা-চিন্তা চলছে। তবে তাজউদ্দিন সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না এমন কথা তিনি বলেননি বা সরকার এ ব্যাপারে ঠিক কী করবেন তার কোন আভাস দেননি। শুধু স্পষ্টভাবে তিনি বলেন যে, কোন অবস্থাতেই ভারত ভীত নয়। ইন্দিরাজী বলেন যে, পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে নানা উস্কানিমূলক কাজ করছে। ভারতকে নানাভাবে বাংলাদেশের ব্যাপারে জড়াতে চাইছে। যা-ই হোক, ভারত যা ঠিক মনে করবে তা করতে ভীত নয়। দুই ব্যতিক্রমঃ অবিলম্বে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের দাবির বিরোধিতা করেন বিকানীরের মহারাজা ডঃ করণি সিং। তিনি লোকসভায় কয়েকটি ছোট গোষ্ঠী ও কয়েকজন নির্দল সদস্যের নেতা। সেই গোষ্ঠী ও ব্যক্তিরা অবশ্য আগেই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। ডঃ করণি সিং-এর বক্তব্যঃ বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলন আসলে ‘বাঙালীদের বিদ্রোহ। ভারতে এ ধরনের ব্যাপার ঘটলে সরকার কী করতেন? কাশ্মীরের কথাও ভাবা দরকার। ইন্দিরাজী তাঁকে বলেনঃ কাশীরে যারা হাঙ্গামা বাধতে চায় তারা জনসাধারণ থেকে বিছিন্ন। পক্ষান্তরে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামীদের পিছনে বিপুল গরিষ্ঠ সমর্থন রয়েছে। বাংলাদেশে গরিষ্ঠ অভিমত পাকিস্তান দাবিয়ে রাখতে চাইছে। মুসলিম লীগ নেতা মহম্মদ ইসমাইল যা বলেন তার মর্মঃ এমন কিছু করা ঠিক হবে না যাতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে বা কোন সঙ্কট সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিলে ওই ধরনের সঙ্কট দেখা দিতে পারে। তবে সরকার এ ব্যাপারে যে কোন ব্যবস্থাই নিন না কেন তার প্রতি তাঁদের দলের সমর্থন থাকবে। ইন্দিরাজী বলেন যে বাংলাদেশের ব্যাপারকে কেন্দ্র করে কিছু লোক সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চাইছে। সকলকে এ বিষয় সতর্ক থাকতে হবে।