পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৭৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ミbrbr| ইয়াহিয়া’র সীমাহীন বর্বরতার বিরুদ্ধে কালান্তর ১৫ মে, ১৯৭১ ইয়াহিয়া’র সীমাহীন বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের আবেদন পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণের উদ্দেশ্যে ডাঃ গণির বেতার ভাষণ সম্প্রতি কমিউনিষ্ট নেতা ডাঃ এ, এম, ও, গণি উর্দু ভাষাভাষি জনগণের কাছে বাংলাদেশের ঘটনাবলী বিশ্লেষণ করে বর্তমানে পাকিস্তান সরকারের “সীমাহীন বর্বরতার”-র চিত্র তুলে ধরে উর্দু ভাষায় একটি বেতার ভাষণ দিয়েছেন এবং সেটি “আকাশবাণী’ থেকে প্রচারিত হয়েছে। এই ভাষণে পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণকে এই বর্বরতার অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য সচেষ্ট হওয়ার আন্তরিক আবেদন জানানো হয়েছে। ডাঃ গণি বলেছেন, “ওদেশে যে ঘটনা ঘটছে তা যে-কোন জাতি এবং যে কোন দেশের লজ্জার বিষয়। রটনার সামান্যতম অংশকে সত্য বলে মেনে নিলেও দেখা যায় পাকিস্তানের বর্তমান নীতি মানবতাবিরোধী। এমন প্রশ্ন থেকে যায় এতে পাকিস্তান সরকারের লাভ কি ? অফুরন্ত প্রাণসম্পদ হানির পর এবং পরস্পরের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষের পাহাড়ের পর বসেও কি পাকিস্তানের অখন্ডতা বজায় থাকবে ? আমরা জানি, কোন জাতি বা দেশকে সামরিক শাসনের দাপটে দাবিয়ে রাখার দিন আজ বিগত। যদি তাই-ই সম্ভব হত, তাহলে কেন শক্তিধর আমেরিকা গত দশ বছর ধরে ভিয়েতনামকে দাবিয়ে রাখতে পারছে না অথচ এ সব সত্ত্বেও পাকিস্তান তার ক্ষুদ্র শক্তির ভিত্তিতে এই হত্যালীলা চালিয়ে যাচ্ছে। “একথা প্রায়ই শোনা যায়- যা ঘটছে তা নাকি পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার এবং এর উপর অপরের হস্তক্ষেপের অধিকার নেই- এই ভিত্তিতেই ভারতকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। জার্মানীতে ইহুদীদের উপর হিটলারের অত্যাচারও তো আভ্যন্তরীণ ব্যাপার তবু কেন সারা বিশ্ব এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছিল। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে ঘটনাবলী আরও সুস্পষ্টরূপে প্রতীয়মান, এখানে হত্যা ও ধ্বংসলীলা খোলাখুলিভাবে ঘটছে। পশ্চিম পাকিস্তান, একটি সম্পূর্ণ পৃথক জাতি অপর এক ভিন্ন জাতি বাংলাদেশের জনগণের উপর শোষণ ও অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে এবং পাইকারী হারে নরহত্যা করছে। অর্থনীতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা যায়, ঐ দুই খন্ডের মধ্যে কোন সামঞ্জস্য নেই। পশ্চিম পাকিস্তানের দিকে তাকালে চোখে পড়ে প্রাচুর্য ও ঐশ্বর্য এবং ংলাদেশের জনগণ যদি এই অমানুষিকতাকে “ঔপনিবেশিক” আখ্যা দিয়ে তা থেকে মুক্ত হতে চায় তবে দোষ কোথায়। “ওখানে সকলে একমত হয়ে বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাইছেন। ওঁদের বাইরে থেকে বাধা দিয়ে ওঁদের অধিকার না মানাকে নিছক আভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলে গ্রহণ করা যায়? অস্ত্রবলে কোন একটা জাতিকে নিজের অধীনস্থ করা এবং অস্ত্রের অপপ্রয়োগ করে নরনারী ও শিশু হত্যাকে কি সমর্থন করা যায়? বিশ্ব-বিবেক কি আজ সুপ্ত। এই নিপীড়ন থেকে নির্লিপ্তভাবে দূরে থাকা এবং অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করা কোন দেশের ন্যায় বিচার। “যে কোন রাষ্ট্র কর্তৃক অপর এক রাষ্ট্রকে স্বীকৃতিদানের অধিকার আন্তর্জাতিক নিয়মের আওতায় পড়ে। চীন তো বিগত বাইশ বছর হল একটি স্বাধীন সরকার গঠন করেছে কিন্তু বহু দেশের স্বীকৃতি না পাওয়ার দরুন কি চীনের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়েছে? যারা স্বীকৃতি দেয়নি তাদের স্পর্ধা ও অন্ধকার মূর্ত প্রমাণস্বরূপ আজও চীন বিরাজমান। বাংলাদেশের আমাদের স্বীকৃতি দিতে হবে কারণ এটাই আপামর জনসাধারণের অভিমত এবং বারবার একথা প্রকাশিত হয়েছে। কোন সত্যানুসন্ধানী ব্যক্তি এটা অস্বীকার করতে পারেন না। এই স্বীকৃতি দানে