পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৭৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

753 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড ২৯8 । জঙ্গীশাহীর হাতে অন্ততঃ দশ লাখ নিহত আনন্দজার পত্রিকা ২৩ মে, ১৯৭১ জঙ্গীশাহীর হাতে অন্ততঃ দশ লাখ নিহত ংলাদেশের ভ্রাম্যমাণ দূতের বিবৃতি বিশেষ সংবাদাতা নয়াদিল্লী, ২২মে- বাংলাদেশের ভ্রাম্যমাণ রাষ্ট্রদূত ডঃ মোখলেসুর রহমান কাল রাতে দিল্লীতে এক বিবৃতিতে বলেন যে, জেনারেল ইয়াহিয়া খানের আদেশে গত ২৫ মার্চ বাংলাদেশ জঙ্গী আক্রমণ শুরুর পর নারী ও শিশুসমেত অন্ততঃ দশ লাখ নিরস্ত্র ও অসহায় বাঙালী নিহত হয়েছে। তিনি বলেন, জেনারেল ইয়াহিয়া খানের অনুগত সঙ্গী প্রশাসক লেঃ জেঃ টিক্কা খান এখনও বাংলাদেশের সর্বত্র ব্যাপক হারে নরহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। আমেরিকা, রাশিয়া ও চীনের আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যরা বাংলাদেশের সমস্ত অসহায় মানুষের বিরুদ্ধে পুরোদস্তুর যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। অগ্নিবৰ্ষী ট্যাংক, কামান, মর্টার ও মেশিনগানের গোলায় তাদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। গ্রাম ও শহরগুলির ওপর ব্যাপকভাবে বোমা ফেলা হচ্ছে। কেমব্রিজের ইতিহাসের পি এইচ ডি, ডঃ রহমান গত ২ মে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। প্রত্যক্ষদশীর করুণ বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, রাজশাহীর কয়েকজন গ্রামবাসী আমাকে একটি গ্রামে নিয়ে যান। সেই গ্রামের ১২০০ থেকে ১৪০০ লোককে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। ংলাদেশে যে উৎপীড়নের কথা প্রচারিত হয়েছে, তা অতিরঞ্জিত-এই মিথ্যা প্রচারের জন্য ইয়াহিয়া খান সাংবাদিকদের সেখানে যা ঘটছে, তা দেখতে দেওয়া হচ্ছে না? শ্রী রহমান বলেন যে, মানবতার নামে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের পক্ষে আমরা দাবি করছে যে, বাংলাদেশে এই ব্যাপক হত্যাকান্ডের জন্য আন্তর্জাতিক বিচারালয়ের উচিত অবিলম্বে জেনারেল ইয়াহিয়া খান ও টিক্কা খানের বিচারে উদ্যোগী হওয়া। তিনি বিদেশী বন্ধুদের এই কথা মনে রাখতে বলেন যে, জঙ্গীশাহীকে কোন রকম অর্থনৈতিক সাহায্য দেওয়া হলে তা বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধেই কাজে লাগানো হবে।