পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৮০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

773 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড তুরস্কের শক্তি পাকিস্তানের চেয়ে একটু বেশী এবং ইরানের শক্তি বহুগুণ কম। সৌদি আরবের ২৫ খানা শব্দের দ্বিগুণ অধিক গতিবেগ সম্পন্ন লাইটনিং বিমান আছে। যেহেতু চীন সম্ভাবিত কোন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বার কোন সম্ভাবনাই নেই বলা চলে, কারণ তাকে রাশিয়া ও আমেরিকার মোকাবিলা করতে হয় এবং ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করা তার নীতিও নয়। তখন পাকিস্তান কোন সাহসে ভারতের সঙ্গে লড়তে চায়? পাঞ্জাবী মিলিটারী আভিজাত্যের দর্প চূর্ণ করার এবং তথাকথিত আজাদ কাশ্মীর পুনরুদ্ধার করবার, চিরকালের মত নাগামিজো সমস্যার সমাধান করবার মত এমন সুযোগ আর কখনু আসবে না। কারণ এখন পাকিস্তানের মাত্র ৮ ডিভিশন সৈন্য পশ্চিমে আর চার ডিভিশন পূর্ব দিকে। সুবর্ণ সুযোগ। আর ভারত আজ যদি ভয় পেয়ে পিছিয়ে যায়- বস্ত্ততঃ ভয় পেয়ে অকারণে ভারত পিছিয়েই গেছে- তবে ইতিহাস তার জন্য ক্ষমা করবে না। প্রায় এক কোটি নবাগতের ভরণ পোষণের ব্যবস্থা করতে তাকে দেউলিয়া হতে হবে এবং কেউ তাকে এ বিষয়ে সাহায্য করতে আসবে না। কারণ মার্কিনরা জানে রুশরাও জানে ভারতকে এখন সাহায্য করার অর্থ হল এশিয়াতে আর একটি “চীনের” সৃষ্টি করা। তার চেয়ে সামরিক ভারসাম্যের নিস্ফল ধোঁকাবাজি চলতে থাকুক। মরুক ভারত আশ্রয় প্রার্থী সমুদ্রে হাবুডুবু খেয়ে। বলতে বাধা নেই যে সাম্প্রতিক সাধারণ নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাধিক্যে জয়লাভ করায় ইন্দিরাজীর প্রতি অনেক বিরূপ জনেরও একটু শ্রদ্ধার ভাব উদয় হচ্ছিল। পূর্ব বাংলার প্রতি আচরণের অপ্রতুলতায়, ব্যর্থতায় আজ তারা সকলেই ক্ষুদ্ধ হয়েছেন এ কথা বলাই বাহুল্য। এর ফলে ভারতের রাজনীতি এই কষ্টার্জিত স্থিতিশীলতা আর বেশিদিন স্থায়ী হবে বলে মনে হয় না। কার্যাকালে যার বল কার্যকর নয় এমন মানুষ কখনও কারো শ্রদ্ধার পাত্র হতে পারে না। বাংলা দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে ভারতের ব্যর্থতা সত্যিই বেদনাদায়ক। পাকিস্তানী জঙ্গীবাদের জয় হলে এশিয়া ভূখন্ডে গুরুতর বিপর্যয় ঘটতে পারে। এবং তার জন্য ভারতের দায়িত্ব হবে পাকিস্তানের চেয়ে কম নয়।