পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৮৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

830 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ৩৩৯। মার্কিন সরকারকে সাফ জবাব কালান্তর ২৫ জুন, ১৯৭১ দেওয়ার সাহস ভারত সরকারের নেই রাজ্য সভায় ভূপেশ গুপ্তর অভিযোগ নয়াদিল্লী, ২৪জুন-মার্কিন সমরাস্ত্র বোঝাই দুই পাকিস্তানী জাহাজকে কেন্দ্র করে আজ রাজ্যসভায় এক দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাবে আলোচনাকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার শরণ সিং অত্যন্ত বেকায়দায় পড়েন। ইউএনআই জানাচ্ছে, এক সময়ে কমিউনিষ্ট সদস্য শ্রী ভূপেশ গুপ্তর সঙ্গে শরণ সিং এর তীব্র কথা কাটাকাটি হয়। শ্রী গুপ্ত অভিযোগ করেন, মার্কিন সরকারকে স্পষ্ট ভাষায় নিন্দা করার সাহস, ইচ্ছা এবং সিদ্ধান্ত এই সরাকারের নেই। দৃঢ়তার সঙ্গে তিনি দাবী করেন, পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহ না করার প্রতিশ্রুতি যে মার্কিন সরকার ভঙ্গ করেছে তার উপযুক্ত জবাব দেওয়ার জন্য ভারত আমেরিকার তেল এবং অন্যান্য ব্যবসায়িক স্বাৰ্থ বাজেয়াপ্ত করা হোক। শ্রী গুপ্ত বলেন, মার্কিন সরকার এই ভাষাই বোঝে। শ্ৰী শরণ সিং সদস্যদের কাছে মার্কিন সরকারের যে অভিমত ভারত সরকার জেনেছে তার এক বিস্তৃত বিবরণ দেন। দৃষ্টি আকর্ষণীয় প্রস্তাবটি ছিল, ফরোয়ার্ড ব্লক সদস্য চিত্ত বসুর। পররাষ্ট্রমন্ত্রী শরণ সিং সদস্যদের কাছে এক বিবৃতিতে বলেন যে, দুটি জাহাজ মার্কিন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাকিস্তানের পথে রওয়ানা হয়েছে সেই সমরাস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার জন্যে মার্কিন সরাকারের কাছে দাবী করা হয়েছে। এবং সঙ্গে সঙ্গে অতীত চুক্তির দোহাই দিয়ে আর নতুন কোন অস্ত্র সরবরাহ করা হবে না এই প্রতিশ্রুতি চাওয়া হয়েছে। শ্রী সিং এও জানান , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই বিষয়ে জরুরী দৃষ্টি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, “আমরা ওদের কাছে থেকে জবাবের প্রতীক্ষায় আছি।’ শ্ৰী সিং সদস্যদের উদ্বেগকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ২২ জুন, নিউইয়র্ক টাইমস যে সংবাদ দিয়েছে তা সঠিক। গত ৮ মে এবং সর্বশেষ ১১ জুন ‘সুন্দর বন আর ‘পদ্মা পাকিস্তানী পতাকা উড়িয়ে নিউইয়র্ক থেকে রওনা হয়েছে এবং তাতে মার্কিন সমরাস্ত্র আছে। তিনি জানান, ২২ জুন সন্ধ্যায় ওয়াশিংটনে ভারতের রাষ্ট্রদূত মার্কিন স্বরাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। নয়াদিল্লীর মার্কিন দূতাবাসেও বিষয়টি জানানো হয়। শ্ৰী সিং বলেন, মার্কিন সরকারের বক্তব্য হলো ২৫ মার্চ এর পর পাকিস্তানকে কোন সমরাস্ত্র সরবরাহের অনুমতি বা রপ্তানি লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। ঐ জাহাজের মালগুলি আগের অর্ডার অনুযায়ী সরবরাহ হয়ে থাকতে পারে এবং এতে হয়ত এমন কিছু আছে যার জন্য রপ্তানি লাইসেন্সের প্রয়োজন হয় না। জাহাজে ৮টি বিমান থাকার কথা মার্কিন সরকার অস্বীকার করেছে। আর কোন নতুন জাহাজ যাবে কি-না সে সম্পর্কে সরকারেরর কাছে কোন তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন তবে তাঁরা খোঁজ করে দেখেছেন। মার্কিন স্বরাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটরী জানিয়েছেন এতে কিছু সমরাস্ত্র থাকতে পারে।