পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৯৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

899 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ৩৭৬। ভারত চুক্তির প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনঃ আনন্দ বাজার পত্রিকা ৯ অক্টোবর, ১৯৭১ চ্যবনের প্রস্তাবে সভায় ঐকমত্য চ্যাবনের প্রস্তাবে সভায় ঐকমত্য কৈলাশনগর, সিমলা, ৮ই অক্টোবর (পি টি আই)- আজ বিকেলে নিখিল ভারত কংগ্রেস (শা) কমিটির উদ্বোধনী অধিবেশনে ভারত-রুশ চুক্তির সমর্থনসূচক প্রস্তাবটি সর্বসম্মত ভোটে গৃহীত হয়েছে। তিন ঘন্টাব্যাপী এই বিতর্কে প্রস্তাব উত্থাপক শ্রী যশোবন্তরাও চ্যাবনের ভাষণের পর সমস্ত সংশোধনী প্রস্তাব প্রত্যাহার করা হয়। শ্রী চ্যবন বলেন, সংশোধনী প্রস্তাবে বড় রকমের কোন হেরফেরের কথা ছিল না; সদস্যরা বিপুলভাবে মূল প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানান। উদ্বোধনী অধিবেশনে ভারত-রুশ চুক্তির সমর্থনসূচক প্রস্তাব পেশ করার সময় অর্থমন্ত্রী শ্রী যশোবন্তরাও চ্যাবন বলেন, এই চুক্তি হল দুই সার্বভৌম, সমান ও বন্ধু রাষ্ট্রের মধ্যে চুক্তির দ্বারা বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের স্বাধীন নীতি অনুসরণের পথে কোন বাধার সৃষ্টি হবে না। শ্রী চ্যবন বলেন, এ চুক্তি কোন দেশের বিরুদ্ধে নয়; তবে ভারতের বিরুদ্ধে যে দেশ কোন অভিসন্ধি পোষণ করে তার এত ভয়ের কারণ আছে। এই চুক্তি দ্বারা এও প্রমাণ হয়েছে যে, ভারত মিত্রবাহিনী নয়। চুক্তির যে অনুচ্ছেদে আছে,-“কোন তৃতীয় রাষ্ট্র দ্বারা চুক্তিবদ্ধ পক্ষদ্বয়ের একের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবার আশঙ্কা দেখা দিলে উভয়েই তার মোকাবিলায় এগিয়ে যাবে,"শ্রী চ্যবন সেইটি পাঠ করে শোনান। এই চুক্তিকে শ্রী চ্যবন ভারত-রুশ সম্পর্কের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, এটা কোন আকস্মিক ঘটনা নয়, পরন্তু দুই রাষ্ট্রের দীর্ঘ সম্পর্ক ও ক্রমবর্ধমান বন্ধুত্বেরই চূড়ান্ত ফল। রাষ্ট্রদ্বয় বিভিন্ন রাজনৈতিক পদ্ধতির অনুসারী হলেও বিশ্বশান্তি, স্বাধীনতা এবং নব জাগ্রত রাষ্ট্রগুলির আর্থিক প্রগতির প্রশ্নে ভারত ও রাশিয়ার লক্ষ্য এক এবং অভিন্ন। শ্রী চ্যবন বলেন, সমগ্র দেশ এই চুক্তিকে অভিনন্দন জানিয়েছে, সংসদে বিপুল সংখ্যক সদস্য সমর্থন জানিয়েছেন। কিছু লোক এই চুক্তির বিরূপ সমালোচনা ও করেছেন। তবে এসব ব্যক্তি সরকারের সমস্ত প্রচেষ্টারই সমালোচনা করতে অভ্যস্ত। বিদেশেও দু-একটি ছাড়া (এরা হয়ত ভারতের প্রতি বৈরীভাবাপন্ন) প্রধান প্রধান রাষ্ট্র সমেত সবাই এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। সর্বশেষ সংবাদ অনুযায়ী চীনও এই চুক্তি ‘কল্যাণকর দিক অনুধাবন করতে রাজি বলে শ্রী চ্যবন উল্লেখ করেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, এ চুক্তি কেবল ভারতের সুবিধার জন্যই নয়,এতে অন্য দেশের অধিবাসীরাও উপকৃত হবেন। ভারতের মত রাশিয়ার জনগণও এই চুক্তিকে বিপুল ভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই চুক্তির ফলে ভারতের গোষ্ঠীনিরপেক্ষ নীতির কোনই তারতম্য হবে না। অথচ বিরূপ সমালোচকরা বলেছেন এই চুক্তি ভারতের গোষ্ঠী-নিরপেক্ষ পররাষ্ট্র নীতির অবসান ঘটাবে। ঐতিহ্য অনুসারে বন্দেমাতরম সঙ্গীত সহযোগে আজ বিকেলে নিখিল ভার কংগ্রেস (শা) কমিটির তিনদিনব্যাপী অধিবেশনের উদ্বোধন হয়।