পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৯৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড তিনি বলেন, কিছুকাল যাবৎই বাংলাদেশের অবস্থা উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে আছে। আমরা কোনো কোনো অঞ্চলে আক্রমণাত্মক ও প্রতিরক্ষামূলক তৎপরতার জন্য সৈন্য পাঠিয়েছি। লেঃ জেঃ অরোরা বলেন যে, তাঁর কিছু আক্রমণাত্মক পরিকল্পনাও আছে। তবে তিনি এখন ফাঁস করবেন না। তবে আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে আক্রমণ করেই পূর্ববঙ্গ রণাঙ্গনের সমস্যার মোকাবিলা করা এবং যত শিগগির সম্ভব পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনীকে “টিট’ করার চেষ্টা করবেন। এর অর্থ হলো পাক-বাহিনীর মোকাবিলা করার জন্যে ভারতীয় জওয়ানরা বাংলাদেশে ঢুকবে। প্রতিরোধ অতীতের বস্ত্ত পাকিস্তানী বাহিনীর প্রতিরোধ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে লেঃ জেঃ অরোরা বলেন যে, বাংলাদেশে মোতায়েন পাক বাহিনীর প্রতিরোধ এখন অতীতের বস্ত্ত। তিনি বলেন, আগরতলা এলাকায় সব চেয়ে জোর লড়াই চলছে। অন্যান্য এলাকাতেও মোটের ওপর তাই। পূর্ব রণাঙ্গনের কোথাও পাকিস্তানী বাহিনী সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতীয় এলাকায় প্রবেশ করেছে কিনা- এই প্রশ্ন করা হলে লেঃ জেঃ অরোরা বলেন, এই ধরনের কোনো খবর আমার জানা নেই। তবে পশ্চিম রণাঙ্গনে কোথাও কোথাও তারা সীমান্ত অতিক্রম করেছে। তিনি বলেন, ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক আইনসভায় মুজিবর রহমান ও তার দলকে বিপুল ভোটাধিক্যে জিতিয়ে বাংলাদেশের জনগণ চেয়েছিলেন মুজিবরের নেতৃত্বে গঠিত সরকার। ভারত সরকারও চান বাংলাদেশে এই সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক। মূলত মার্কিন ও চীনা অস্ত্র পূর্ববঙ্গে অবস্থিত পাক বাহিনীর অস্ত্রসম্ভার সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে লেঃ জেঃ অরোরা বলেন যে, পাক বাহিনী মূলত মার্কিন ও চীনা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে লড়ছে। এছাড়া তাদের কাছে কিছু ১০৫ মিলিমিটারের ইতালীয় কামানও পাওয়া গেছে। তেজগাঁ কুর্মিটোলায় আক্রমণ ভারতীয় বিমান বাহিনী আজ সকালে যে আক্রমণ চালায় তার সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে লেঃ জেঃ অরোরা বলেন যে, ভারতীয় বাহিনীর আক্রমণ একান্তভাবেই সামরিক লক্ষ্যবস্তত্তর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। ভারতীয় বাহিনী আজ ঢাকার তেজগাঁও ও কুর্মিটোলা বিমানঘাঁটি এবং অন্যান্য স্থানের বিমানঘাঁটির উপর আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণের উদ্দেশ্য হচ্ছে পূর্ব রণাঙ্গনে পাক বিমান বাহিনীকে খতম করা। তিনি বলেন যে, আমরা রানওয়ে নষ্ট করছি না এবং পূর্ববঙ্গের অর্থনৈতিক কাঠামো বজায় রাখার দিক থেকে প্রয়োজনীয় অসামরিক লক্ষ্যবস্ত্তও আমরা নষ্ট করছি না। হতাহতের সংখ্যা জানা যায়নি তিনি বলেন যে, ভারতীয় বাহিনীর হতাহতের সংখ্যা এখনও জানা যায়নি। তবে কোন কোন অঞ্চলে ভাল যুদ্ধ হয়েছে। পাকিস্তানী সৈন্যরা ভালই লড়েছে। তবে আমি আমার জওয়ানদের কৃতিত্বে গর্বিত। মুক্তিবাহিনীর উচ্ছসিত প্রশংসা করে অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন যে, গত দু’মাসে তারা যে কৃতিত্ব দেখিয়েছে তা তারিফ করার মতো। ভারতীয় বাহিনী মুক্তি ফৌজকে কোন রকম সাহায্য দিয়েছে কিনা এই প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা তাদের কোন সাহায্যই দিইনি। তবে আমি এ বিষয়ে নিঃসন্দেহ যে আমার সরকার শীঘ্রই মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে মিশে একই কমান্ডের অধীনে থেকে কাজ করা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবেন।.