পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৯৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

934 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড সোভিয়েট প্রস্তাব সোভিয়েট প্রতিনিধি প্রস্তাব দিলেনঃ (১) বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমাধানের আহবান জানানো হোক। এর দ্বারা এক্ষণি শত্রতার অবসান ঘটবে। (২) পাকিস্তানের সামরিক কর্তৃপক্ষকে আহবান জানানো হোক, বাংলাদেশ পাকবাহিনীর সর্বপ্রকার হত্যা ও হিংসাত্মক কাজ বন্ধ করতে হবে। কারণ এই হত্যা ও হিংসাত্মক কাজ থেকে পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। আমেরিকা গ্রুপের আমেরিকার প্রতিনিধি মিঃ জর্জ এইচ বুশ তাঁর প্রস্তাবে বলেন, নিরাপত্তা পরিষদ অবিলম্বে অস্ত্রসংবরণের জন্য ভারত ও পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে আহবান জানাক। দুটি দেশ যেন এই উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করে। উভয় সরকার ও সংশ্লিষ্ট অন্য সকল পক্ষ, শরণার্থীদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য যেন সর্বতোভাবে চেষ্টা করে। সেক্রেটারী জেনারেল এই উপমহাদেশে শান্তি স্থাপনের জন্য যে প্রস্তাব দিয়েছেন তাতে উভয় দেশেরই সাড়া দেওয়া উচিত। এজন্য সীমান্ত বরাবর রাষ্ট্রসংঘের পর্যবেক্ষক নিয়োগ, অস্ত্রসংবরণ ও সৈন্য প্রত্যাহার হওয়া উচিত। তিনি বলেন, পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ। এই অবস্থায় সমস্যা সমাধানের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষে বলপ্রয়োগের পথ গ্রহণ করা উচিত হবে না। সমর সেনের ভাষণ রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি শ্রী সমর সেন নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হবেই। এ ঘটনা সুনিশ্চিতই এবং ভারতও বাংলাদেশের মানুষকে সাহায্য করে যাবে, যে সব মানুষের মনোবল কোনভাবেই ধ্বংস করা যাবে না। তিনি বলেন, পাকিস্তানী কামান যখন ভারতের গ্রামের ওপর অবিরত গোলাবর্ষন করে চলল, তখন ভারতের পক্ষে তার জবাব দেওয়া ছাড়া অন্য কোন পথ ছিল না। পাকিস্তান নিজের দেশবাসীকে জবাই করতে লাগল। তারপর তারা কামানের মুখ ভারতের দিকে ফেরাল। তখন আমাদের কাছে ঐ কামানগুলিকে স্তব্ধ করে দেওয়া ছাড়া অন্য পথ ছিল না। এবং আমাদের বেসামরিক লোকদের রক্ষা করার উদ্দেশ্যে আমরা তা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগেই সৈন্য সমাবেশ শ্রী সেন বলেন, ভারতের বহু আগে পাকিস্তান সীমান্ত বরাবর সৈন্য সমাবেশ করেছে। বাঙ্গালী বিদ্রোহীদের কোনভাবে শায়েস্তা করতে না পেরে পাকিস্তান তাদের এই বিশেষ ধরনের সঙ্কটের যথার্থতা প্রমাণের জন্য অন্য একটা পথ খুঁজছিল। বর্তমান সংঘর্ষ সেই খোঁজার পরিণতি। অধিবেশন স্থগিত সোভিয়েট ভেটোর পরে নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশন বিকেল আড়াইটা পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়।