পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৯৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

940 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড কুমিল্লাখন্ডে আমাদের সৈন্যরা বরচাঁদ ও একতাবপুর মুক্ত করার পর গোমতী নদী পার হয়ে গেছে। মেঘালয়খন্ডে ভারতীয় সৈন্যরা কমলপুরের ৪০ কিঃ মিঃ দক্ষিণে জামালপুর ও চরবাংলি দখল করার পর ময়মনসিংহ জেলার দিকে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। পশ্চিমবঙ্গখন্ডে ভারতীয় সৈন্যরা ঠাকুরগাঁও-এর ২৭ কিঃ মিঃ দক্ষিণ-পূর্বে বীরগঞ্জ এবং রংপুরের ২৫ কিঃ মিঃ উত্তরে কালিগঞ্জ আজ সকালে দখল করেছে। হিলির ১৫ কিঃ মিঃ উত্তর-পূর্বে নবাবগঞ্জ এবং যশোরের ৩০ কিঃ মিঃ উত্তর-পশ্চিমে কোটচাঁদপুরও ভারতীয় বাহিনীর দখলে এসেছে। ভারতীয় সৈন্যবাহিনী মুক্তিবাহিনীর সহযোগিতায় সমস্ত খন্ডেই পাক সৈন্যদের ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করে চলেছে। বিমান বাহিনীর ভূমিকা শিলং-এ ইষ্টাৰ্ণ এয়ার কম্যান্ডের এয়ার মার্শাল দেওয়ান সাংবাদিকদের বলেছেন যে, কুমিল্লার উপর ভারতীয় বিমান আর একটি পাকিস্তানী স্যাবর জেট বিমানকে গুলিবিদ্ধ করে ভুপাতিত করেছে। এই নিয়ে বাংলাদেশে ১৫টি পাকিস্তানী বিমান ধ্বংস হলো। এখন পর্যন্ত এই খন্ডে ভারতের ৫টি বিমানের ক্ষতি হয়েছে। ১৮৬ বার হানা তিনি বলেন যে, ভারতীয় বিমান বাহিনী ১৮৬ বার আক্রমণাত্মক হানা দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানীদের সামরিক লক্ষ্যবস্ত ও ঘাঁটিগুলির ব্যাপক ক্ষতি করেছে। ভারতীয় বিমান আজ কুর্মিটোলা ও তেজগাঁও বিমান ঘাঁটিতে ২৪ পাউন্ডের বোমা ফেলে বিমান ঘাঁটি দুটিকে সম্পূর্ণ অকেজো করে তুলেছে। নয়াদিল্লী, ৬ই ডিসেম্বর (ইউ এন আই)- ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশে আখাউড়ার ট্রাঙ্ক টেলিফোন অফিস চালু হয়েছে বলে আজ এখানে সরকারীভাবে জানান হয়েছে। জনসাধারণ এই টেলিফোনে যোগাযোগ করতে পারেন বলেও জানান হয়েছে। ২টি পাক ট্যাঙ্কার আটক দিল্লীতে সরকারী মুখপাত্র জানিয়েছেন যে, পাকিস্তানের জন্য সম্ভারবাহী ২টি বড় ট্যাংকারকে আজ ভারতীয় নৌ বাহিনী মেঘনা নদীর উপকূলে আটক করেছে। বিমানবাহী নৌবহন খুলনার চালনা ও মঙ্গলা বন্দরের লক্ষ্যবস্তগুলির উপর আক্রমণ চালিয়েছে। খুলনার উপকূলে একটি পাক বাণিজ্য জাহাজ ভারতীয় বিমানকে লক্ষ্য করে গোলা ছুড়লে বিমান বাহিনী জাহাজটিকে আক্রমণ করে। আগরতলা বিপদমুক্ত আগরতলা অফিস থেকে অনিল ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী এখন আখাউড়া এবং কুমিল্লা জেলায় আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পাকিস্তানী ঘাঁটি অধিকার করায় আগরতলা এখন বিপদমুক্ত বলা যেতে পারে। ভারতীয় বাহিনী এখন আগরতলার সর্ব উত্তরে অবস্থিত ধর্মনগর থেকে জুড়ি রেল ষ্টেশন পর্যন্ত (ধর্মনগর থেকে ১২ মাইল) এলাকা দখল করে নিয়েছে। শ্রীহট্টের শালুটিকর বিমান ক্ষেত্রের তিন মাইলের মধ্যে ভারতীয় বাহিনী পৌছে গেছে। শ্রীহট্টের কোটাক ও লালখন্ড চা-বাগান ভারতীয় বাহিনী দখল করেছে এবং শ্রীমঙ্গল ও শায়েস্তাগঞ্জের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে পাক বাহিনীর সেরা দূর্গ ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট ছেড়ে পাক বাহিনীর একাংশ চাঁদপুর চলে গিয়েছিল। এখন চাঁদপুর ও ময়নামতির মধ্যে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পাকবাহিনী এখন ক্রমশঃ পিছু হটে যাচ্ছে।