পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৯৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

944 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড প্রাণের স্পন্দন? ধর্মনিরপেক্ষ এবং গণতন্ত্রী ভারত আদর্শের মূল্য দিতে জান। পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক বদ্ধ জলার মধ্যে বাংলাদেশ ফুটন্ত পদ্ম। তার সারা অঙ্গে রয়েছে গণতন্ত্র এবং ধর্শনিরপেক্ষতার ছাপ। আদর্শের এই ঐক্য চেতনা ভারত এবং বাংলাদেশকে টেনে এনছে কাছাকাছি। তাই নবীনে মাথায় প্রবীণ ঢেলেছে প্রথম অভিষেকের কল্যাণ বারি। তার হাতে পরিয়ে দিয়েছে সৌভ্রাতৃত্বের রাখী। আন্তর্জাতিক সমাজের পাদপ্রদীপের সামনে আসার আগেই নবজাতককে গলা টিপে মারতে চেয়েছিল কায়েমী স্বার্থবাদীর দল। দুহাতে তাকে আড়াল করে রেখেছে ভারত। ইয়াহিয়ার অস্ত্র পড়েছে তার পিঠে। ভ্ৰক্ষেপ করেনি সে। জমির লোভ তার নেই। আদর্শের জন্য যেকোন ত্যাগ স্বীকারে সে প্রস্তুত। বাংলাদেশকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দানের সঙ্গে সঙ্গে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে পশ্চিম পাকিস্তান। এটা অপ্রত্যাশিত নয়। একসঙ্গে থাকতে পারে না কল্যাণব্ৰতী এবং মানবদ্রোহী দুটি রাষ্ট্র। বাংলাদেশে যারা গণহত্যার নায়ক, যারা লক্ষ লক্ষ নরনারীকে ভিটে ছাড়া করার নিপীড়ক যন্ত্র এবং যারা নারীর ইজ্জত অপহারক তারা নিঃসন্দেহে সভ্য সমাজের অপাঙক্তেয়। পূর্বের নবীন সূৰ্য্যকে অভিনন্দন জানাতে ভারত যখন ব্যস্ত তখন অন্ধকারের জীবগুলো খুঁজে বেড়াচ্ছে বিবরাশ্রয়। রেহাই পাবে না ওরা। ভারতের সার্বভৌম মর্যাদার উপর আঘাত হেনেছে বর্বরের দল। চরম শাস্তি তাদের পাওনা। কোথায় আজ পাক দোস্তদের শয়তানি চক্র? একসঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে তারা করেছে উন্মত্ত নর্তন ঠেকাতে পেরেছে কি স্বাধীন বাংলাদেশের অগ্রগতি? থামাতে পেরেছে কি তারা জওয়ানদের প্রচন্ড প্রত্যাঘাত? নির্বোধ ইয়াহিয়া এবং নির্বোধ তাঁর পরিষদ দল। ওদের ধ্বংস অনিবার্য। বাংলাদেশ খুঁড়েছে অত্যাচারী স্বৈরতন্ত্রীর কবর। তাতে ইসলামাবাদের শব নামাবে ভারত। আর এই কবরে মাটি দেবে ভারত এবং ংলাদেশের সাড়ে বাষট্টি কোটি নরনারী। এ দুটি রাষ্ট্রের বন্ধুত্বের বুনিয়াদ পরস্পরের বুকের পাঁজরে গড়া এবং শহীদের তাজা রক্তে সিঞ্চিত। এ বন্ধন অক্ষয় এবং ভবিষ্যতের অপরূপ আলোকে ভাস্বর। স্বাগত সার্বভৌম বাংলাদেশ, স্বাগত তার রাহুমুক্ত জনতা এবং স্বাগত তার সরকার। জয় বাংলা