পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৯৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

956 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ৪০১ পাক-ভারত-বাংলাদেশ যুদ্ধের যুগান্তর ১১ ও ১২ ডিসেম্বর, খবর ృస్సి 8 দুর্বার গতিতে ঢাকার পথে হেলিকপ্টার ও ষ্টিমারে মেঘনা অতিক্রমঃ নোয়াখালী মুক্ত চালনা ও মঙ্গলা বন্দরে ভারতীয় নৌ-বহর (সুখরঞ্জন সেনগুপ্ত) কলকাতা, ১০ই ডিসেম্বর-ঢাকার পথে ভারতীয় সৈন্যবাহিনী আজ দুরন্ত মেঘনা অতিক্রম করেছে। মেঘনার পূর্ব পাড়ে আশুগঞ্জ থেকে বিদ্যুৎগতিতে ষ্টীমার ও হেলিকপ্টারে ভারতীয় বাহিনী পশ্চিম পাড়ে ভৈরব বাজারে অবতরণ করেছে। এখানে মেঘনা উত্তর-দক্ষিণে প্রবাহিত এবং নদীর প্রস্থ দু’মাইলেরও বেশী। পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যরা এখানে ভৈরববাজারের গুরুত্বপূর্ণ সেতু ভেঙ্গে দিয়েছে। মুক্তিবাহিনীর কলাম ভারতীয় বাহিনীর সাহায্যে আজ নোয়াখালী মুক্ত করেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের উত্তরে নোয়াখালীর মুক্তি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। নোয়াখালীর মুক্তির বিশদ বিবরণ জানা যায়নি। চালনা-মঙ্গলা দখল খুলনার কাছে চালনা ও মঙ্গলা বন্দর আজ মুক্তি বাহিনী ও ভারতীয় সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী মুক্ত করেছে। ভারতীয় নৌবাহিনী এদের সাহায্য করেছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজগুলো আজ সকাল সাতটায় বন্দরে প্রবেশ করে। ইষ্টাৰ্ণ কম্যান্ডের একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানান যে, চাঁদপুর থেকে পলায়নের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর প্রায় ৯০ জন পাকিস্তানী সৈন্যকে আটক করা হয়েছে। যশোর সেক্টরে ভারতীয় বাহিনী খুলনার পথে রূপদিয়া, চেঙ্গুটিয়া, হরিশংকরা, ডাঙ্গামারা দখল করে ফুলতলার কাছাকাছি পৌঁছেছে। ভারতীয় বাহিনী সড়কের উপর একটি অতিকায় ব্যারিকেড বানিয়ে খুলনার উত্তরে পশ্চিম পাকিস্তানীদের একটি কলামকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। এই অভিযানে ৩০টি গাড়ী, ৬টি রিকয়েললেস গান ও ৪টি ভারী মর্টার দখল করা হয়েছে। দিনহাটা থেকে আমাদের নিজস্ব সংবাদদাতা জানাচ্ছেন যে, রংপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ শহর লালমনিরহাট এবং একটি থানা সদর দপ্তরও পাকিস্তানীদের হাত থেকে কেড়ে নেয়া হয়েছে। এই অঞ্চল থেকে পাক সেনাদের এত তাড়াতাড়ি চলে যেতে হয়েছিল যে, পাক চমুদের অর্ধভুক্ত পাত্র এবং কাগজের ওপর খাপ খোলা ফাউন্টেনপেনও সেখানে পাওয়া গিয়েছে। রংপুর সেক্টরে ভারতীয় বাহিনী দুরা, বরচাংগ্রাম মুক্ত করে বীরগঞ্জকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। রংপুর এলাকায় পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যদের একটি ব্রিগেড় রয়েছে এবং এই ব্রিগেডের সৈন্যরা ভারতীয় বাহিনীর অগ্রগতিকে কোন কোন জায়গায় অল্প বাধা দিচ্ছে। ভারতীয় বিমান বাহিনী রংপুর, বিসপাড়া গাইবান্ধা ও সৈয়দপুরের ওপর আক্রমণ চালিয়ে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত করে দিয়েছে।