পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৯৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

963 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ৪০৪। পাক-ভারত-বাংলাদেশ যুদ্ধের যুগান্তর ১৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ খবর ভারতীয় গোলার আওতায় ঢাকা জওয়ানেরা শহরের উপকণ্ঠে পরিমল ভট্টাচার্য যুদ্ধ এখন ঢাকা, দখলদারেরা ভারতীয় কামানের পাল্লার আওতায়। খানসেনসা তিনদিক থেকে বেষ্টিত হয় পড়ছে। তাদের স্বরচিত এবং স্বনির্ভাচিত মৃত্যুফাঁদ ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। ভারতের ছত্ৰী বাহিনী সংগঠিত, মুক্তিবাহিনী সক্রিয়। ভৈরববাজার থেকে আগুয়ান একদল জওয়ান নরসিংদী পেরিয়ে রাজধানীর উপকণ্ঠে। আর একদল ধেয়ে আসছে জেলাসদর টাঙ্গাইল, মিরজাপুর সোমবারই মুক্ত করে জয়দেবপুর। এটি একটা বিখ্যাত অরডন্যান্স ফ্যাকটরির আস্তানা। শীতলক্ষ্যা নদী পার হওয়ারও চেষ্টা চলছে। যমুনার বাধাও অতিক্রান্ত। চাঁদপুর বিজয়ী বাহিনী মেঘণা পার হয়েছেন দাউদকান্দিতে। মুক্তিবাহিনীর আছে মিত্রবাহিনীর পাশে। তিন দিক থেকে তিনটি ইউনিট ঢাকার গায়ে গায়ে। অবরুদ্ধ ঢাকা শহর থেকে ভয়েস অব আমেরিকার সংবাদদাতা জানিয়েছেন, ভারতীয় সৈন্য ঢাকার কেন্দ্র থেকে মাত্র ১১/১২ মাইল দূরে। লড়াই এখন প্রায় শহর এলাকাতেই। দিল্লীতে একজন সরকারি মুখপাত্র বলেছেন, আর একটি দিন কি দুই দিন মাত্র, তার মধ্যেই ঢাকা এলাকায় আমরা বেশ জোরালে হয়ে এঁটে বসবো। কিন্তু মনে রাখতে হবে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা এবং এখানেই দখলদারদের বৃহত্তর সমাবেশ। জঙ্গী নেতারা ঢাকা মুক্তির লড়াইয়ে বাধা দিতে বদ্ধপরিকর। ভারতের জওয়ানদের দ্রুত অগ্রগতির খবরে দখলদার বাহিনী দিশাহারা। ফিল্ড কমান্ডররা পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ রাখতে পারছেন না। বিমান নেই। গোলন্দাজরাও প্রায় সাবাড়। ট্যাঙ্ক বা কোথায়? সেনাপতিদের মধ্যে আছেন ছয়জন মেজর জেনারেল। বারো তের দিনের লড়াইয়ে বাংলাদেশে দখলদার বাহিনী ছন্নছাড়া। অথচ যুদ্ধ যখন শুরু হয় তখন দখলদারদের কম করেও ষাট হাজার সেনা ছিল। পাকিস্তানী দখলদাররা একিদেক ঢাকা মুক্তির লড়াইয়ে বাধা দেওয়ার জন্য ফন্দি আঁটছে। শহরে কারফিউ সমানে চলছে, রাতে ঘুটঘুটে অন্ধকার। বেসরকারী বাড়িতেও দখলদার সেনারা ঢুকে পড়েছে। ঘন ঘন গোলা ফাটিয়ে তাদের চাঙ্গা রাখার চেষ্টা হচ্ছে। নির্দেশ জারী হয়েছে, এই সেনাদের কেউ বিন্দুমাত্র এদিক ওদিক করলে তাকে গুলি করা হবে। অন্যদিকে ভারতীয় জওয়ানদর কাছে পাক সেনাদের আত্মসমর্পণের পালা সমানে চলেছে। সোমবার লাকসাম ও কুমিল্লায় আরও এক হাজার একশ’ চৌত্রিশজন আত্মসমর্পণের পালা সমানে চলেছে। সোমবার লাকসাম ও কুমিল্লায় আরও এক হাজার একশ’ চৌত্রিশজন আত্মসমর্পণ করেছে। তাদের মধ্যে চৌদ্দজন অফিসার ও পচিশজন জেসিও আছেন তারা ৫৩ ব্রিগেড, ২৩ পানজাব, ১৫ বালুচ, ৩৯ বালুচ, ৫২ ফিল্ড রেজিমেন্ট, ৪৭ ফিল্ড কোম্পানী ইডজিনয়ার ও ২১ আজাদ কাশ্মীর রেজিমেন্টের। ঢাকা ছাড়া খুলনা, বগুড়া ও চট্টগ্রাম সেক্টরে তুমুল লড়াই হচ্ছে। খুলনার কাছে তিন দিন ধরে লড়াই চলছে। এখানে ওরা মরীয়া, কারণ শত্রবাহিনীর পালাবার পথ নেই। ভারতের জওয়ানরা তাদের চেপে ধরেছেন। শত্রু সেনারা যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। খুলনা যাওয়ার পথ জলাভূমি। এই সুযোগ